বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে দেশে। প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। অনেক জেলায় ডুবে গেছে প্রধান সড়ক। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও মাছের ঘের। ত্রাণ না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন দুর্গতরা।
এখনো অনেক নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুর্ভোগ বেড়েছে পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষের। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিভিন্ন স্থানে। দুর্গত এলাকায় খাদ্য, জ্বালানি ও বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে। আছে গবাদি পশুর খাবার সংকট।
প্রবল বর্ষণ ও উজানের ঢলে বেড়েছে নদনদীর পানি। তলিয়ে গেছে শরীয়তপুর-মাওয়া সড়কের বিভিন্ন অংশ। পানি আরও বেশী হলে ঢাকার সঙ্গে সড়কপথে শরীয়তপুরের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানায় স্থানীয়রা। ডুবে গেছে নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা। খোলা আকাশের নিচে দিন কাটছে অনেকের।
ফেনীর সোনাগাজীর ছোট ফেনী নদীর ৮টি স্থানের ভাঙনে রাস্তা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
রাজবাড়ীতে বাড়ছে পদ্মার পানি। জেলার অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট ও শিশুদের নিয়ে অভিভাবকরা পরেছেন বিপাকে। বন্যায় শতশত বিঘা জমির ধান, পাট, বাদাম পানিতে ডুবে যাওয়ায় চিন্তিত কৃষক।
কুড়িগ্রামে অবিরাম বৃষ্টির কারণে ধরলা নদীর পানি ২০ সেন্টিমিটার বেড়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি অপরিবর্তিত থাকলেও বিপদসীমার উপরে। বন্যার পানি প্রবেশ করে চিলমারী উপজেলা শহরসহ নতুন করে আরও ৫০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ নিয়ে জেলার ৩ লাখ পানিবন্দি মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। জেলার ৭৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৬টি ইউনিয়নের ৪৭৫টি গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে আছে।
টাঙ্গাইলে যমুনাসহ সব নদীর পানি কমলেও জেলার পূর্বদিকের উপজেলায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ছোনকা পাড়া ব্রিজ বন্যার পানির তোড়ে ভেসে যাওয়ায় বাসাইল উপজেলা সদর থেকে কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন সড়কটি বন্ধ রয়েছে। এদিকে যমুনা, ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদীর পানি কিছুটা কমেছে।
বাসাইল ও মির্জাপুর উপজেলায় বেশ কয়েকটি সড়ক ও সেতু ধসে যাওয়ায় ভেসে গেছে অনেক গ্রাম। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তলিয়ে আছে পানিতে। জেলা প্রশাসক জানান শহর রক্ষা বেড়িবাঁধ রক্ষায় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
সিরাজগঞ্জে জেলার সার্বিক বন্যার পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বন্যায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বন্যা দুর্গত মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে পানিবাহিত রোগ।
গাইবান্ধায় তিস্তা, ঘাঘট, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীর পানি সামান্য কমলেও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের। এসব এলাকায় খাদ্যাভাব, পানির সংকট ও পয়োনিষ্কাশন সমস্যা প্রকট।
সিলেটের দ্বিতীয় দফা বন্যার পানি বাড়িঘর থেকে নামার আগেই আবার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমা-কুশিয়ারার পানি। নিম্নাঞ্চলের বহু এলাকা এখনো পানিতে ডুবে আছে।
ফরিদপুর জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। এ ছাড়া সরদপুর, চরভদ্রসন ও ফরিদপুর সদর উপজেলার শতাধিক গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।