একজন অভিযুক্ত আসামীর বিরুদ্ধে ৩২টি মামলা রয়েছে জেনেও কেউ কোন কথা বলেনি। একজন অভিযুক্ত আসামী সুশিল সেজে টেলিভিশনের টক শো’তে বসে বিজ্ঞের মত জ্ঞান বিলাচ্ছে, কেউ প্রশ্ন করেনি তাকে। ধরা পরার পরে গনমাধ্যমে ফিরিস্থি ছাপা হচ্ছে এখন প্রতিদিন। প্রতিযোগিতা চলছে কে কার আগে সাহেদের তথ্য ফাঁস করবে। এতদিন এরা কোথায় ছিল? ৩২টি মামলার আসামীর এসব তথ্যের খোঁজ করতে কেউ এগিয়ে এলোনা কেন? এখন সরকারের উপর দায় চাপিয়ে রাজনীতিকে ঘোলা করার চেষ্টা চলছে অবিরাম। সাহেদ দলের অবস্থান দাবী করেছে, সত্যতা যাচাই না করেই যারা সাহেদকে গুরুত্বপুর্ন বানিয়েছেন, তাদের দায় কি কম? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিংবা মহামান্য রাষ্ট্রপতির সামনে যাওয়ার মত পদবী সাহেদের ছিলনা। কেউ না কেউ সাহেদকে ঐ পর্যন্ত যেতে সাহায্য করেছে, তারা কারা? এসব প্রশ্ন এখন সামনে আসবেই। জবাবও দিতে হবে সংশ্লিষ্ঠদের। সাহেদরা আগেও ছিল এখনও আছে থাকবেও, রাজনীতি থেকে মধু খাওয়ার সাহেদ এখন অনেক। মৌমাছির মত সাহেদরা একা না, দলবেধেই আসে। বিপদে মূখটি লুকোয় থাকে, এরা সংগবদ্ধ এবং শক্তিশালী। কিছুক্ষন আগে সাহেদ গ্রেপ্তার হয়েছে, নাহয় সন্দেহ দানা বাধত বৈকি! এদিকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে রাজনীতি শুরু হয়ে গেছে। নিত্য টক শো’তে এসে বিদগ্ধজনেরা সরকারের সমালোচনা করছেন যেন, দেশ শেষ হয়ে গেছে। শেখ হাসিনা দেশকে ধংস করে দিয়েছে। দেশের মানূষকে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা চলছে নিরন্তর। ৭৩ থেকে ৭৫ বংগবন্ধুর সরকারের বিরুদ্ধেও একই রকম ষড়যন্ত্র চলেছিল। ২৪ টি টেলিভিশন চ্যনেল আর অগনিত পত্রিকা (ইন্টারনেটেও আছে) নিরন্তর প্রচারনা চালাচ্ছে, প্রবাসে আরও বেশী। জামাত- বি এন পি এখন ভার্চুয়ালী তৎপর। কারো সংগে কথা হলেই প্রচারিত সংবাদের সুত্র ধরেই বলতে শুরু করেন সত্যটি না জেনে। সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অনঢ় অবস্থানে। দলীয় পরিচয়কেও অগ্রাহ্য করা হচ্ছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। কিন্তু কাজটি করবে কে? যাদের উপর দায়িত্ব ন্যস্ত তারাকি স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন? নোবেল কোভিড-১৯ বিশ্বকেই বদলে দিয়েছে। উন্নত দেশেও চরম দুঃসময় অতিবাহিত করছে। এমন দুঃসময়ে বাংলাদেশে বন্যা বিপদকে দিগুন কিরে দিয়েছে। দুটোই প্রাকৃতিক বিপর্যয়। সরকার সাধ্যমত দুর্যোগ মোকাবেলার চেষ্টা চালাচ্ছে কিন্তু, মানূষের সহযোগিতা নেই। শিক্ষিত লোকেরাও এই দুর্যোগে বিরূপ সমালোচনা করছেন সরকারের বিরুদ্ধে। তাদের কাছেও কি কোন বাস্তব পরিকল্পনা আছে এই বিপদ উত্তরনের? একজন সাহেদ কিংবা সাব্রিনাকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ ছড়ানো কি সত্যিকার নাগরিক দায়িত্ব? রাজনৈতিক নেতারা নিরব, জনগনের প্রতি দায়ীত্ববোধ নিয়ে কেউ এগিয়ে আসেননি। সরকারী দলের নেতারাও দায়সারা বক্তব্য দিয়ে নিরাপদ অবস্থানে। জনগনের সাথে সম্পর্ক নেই কারোরই। একমাত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রীই সব সংকা উপেক্ষা করে কাজ করে চলেছেন। অন্যরা সাহেদ, পাপলু আর সাব্রিনাকে নিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন যখন জাতী তাদের পরামর্শ চায়। সাহেদ কিংবা সাব্রিনার বিচার হবেই, এমন নিকৃষ্ট অপরাধীদের খবর শিরোনাম করে দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার সামিল। প্রতিদিন মানূষ প্রান হারাচ্ছে করোনায়, চিৎকার করেও মানূষকে দুরত্বে রাখা যাচ্ছেনা। লক ডাউন উপেক্ষা করে তুচ্ছ ছুতোয় বেড়িয়ে পরছে আইনের বুহ্য ভেদ করে, ছড়িয়ে দিচ্ছে সংক্রমন। এটাই কি রাজনৈতিক বিতর্কের উপযুক্ত সময়? সরকার শক্ত অবস্থানে গেলে একই ব্যক্তিরা ভিন্ন কথা বলবেন, দায়ী করবেন সরকারকেই। গুছিয়ে কথা বলা আগে ছিল শিল্প, এখন উন্নত পেশা। কথা বলেই ভাল উপার্জন করেন অনেকেই। সব বিষয়েই টক শোতে আসা ব্যক্তিরা কথা বলেন। সব ব্যপারেই তারা সমৃদ্ধ, জাতি তাদের জ্ঞানগর্বে বিকশিত হচ্ছে। সাবাস বাংলাদেশ!
আজিজুর রহমান প্রিন্স
রাজনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক
টরেন্টো, কানাডা
১৪ জুলাই ২০২০।