প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কোরবানির ঈদের ছুটির সময় রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রামের সঙ্গে অন্যান্য জেলায় যাতায়াত বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছে কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
কমিটি এই চার বড় মহানগরীসহ সব শহরের ভেতরে কোরবানির পশুর হাট না বসানোরও পরামর্শ দিয়েছে। বিকল্প হিসেবে তারা ভার্চুয়াল বেচাকেনার পরামর্শ দিয়েছে। শুক্রবার কোরবানির ঈদ সামনে রেখে জাতীয় পরামর্শক কমিটি করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য এক সভায় বসে সরকারকে এই সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
সভায় কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ এখনো নিয়ন্ত্রণে না আসা সত্ত্বেও ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় অবাধ জীবনযাত্রায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। কমিটি ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় কঠোর নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম চালানোর পরামর্শ দেয়। ঈদুল আজহায় পশুর হাট বসানোর বিষয়ে তৈরি করা সুপারিশপত্রে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রামে যেন পশুর হাট স্থাপন না করা হয়, তা জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পশু কেনাবেচার ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলা হয়েছে।
সভায় অ্যান্টিজেন বেজড কোভিড-১৯ পরীক্ষার অনুমতির জন্য ঔষধ প্রশাসনকে পরামর্শ দেওয়া হয়, যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে পরীক্ষার সুযোগ প্রান্তিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায়। অ্যান্টিবডি শনাক্তকরণ পরীক্ষার ক্ষেত্রে জাতীয় কারিগরি পরামর্শ কমিটির সিদ্ধান্তে বহাল থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। বলা হয়, এ ক্ষেত্রে সেরোসার্ভেইল্যান্সের জন্য আইজিজি ও আইজিএম (IgG ও IgM) আলাদা করা যায়, এমন অ্যান্টিবডি কিটের প্রয়োজন, সাম্প্রতিক সংক্রমণ ও আগের সংক্রমণ পৃথক করা না গেলে সেরোসার্ভেইল্যান্স অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। সেরোসার্ভেইল্যান্স কার্যক্রম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি বেসরকারিভাবে এই কার্যক্রমে না যাওয়ার মতামত দেওয়া হয়।
এ ছাড়া আরটিপিসিআর টেস্টিং কিট একক কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে সরবরাহের পরিবর্তে আরো কিছুসংখ্যক প্রতিষ্ঠান থেকে সরবরাহের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে সভায় মত দেওয়া হয় এবং বলা হয়, এতে কিট সংকট এড়ানো যাবে। এ ছাড়া একই ধরনের টেস্টিং কিটের পরিবর্তে অধিকতর উন্নত এবং সুলভ মূল্যের টেস্টিং কিট সংগ্রহ করার জন্য বলা হয়।
কমিটির সভায় হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন হাসপাতালে কভিড-১৯ আক্রান্ত ও কভিড-১৯ আক্রান্ত নন এমন প্রসূতি মায়েদের চিকিৎসার জন্য আলাদা ইউনিট গঠন বিষয়ে আলোচনা হয় এবং এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া কভিড-১৯ আক্রান্ত প্রসূতি মায়েদের সেবার জন্য পিপিই সরবরাহ নিশ্চিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
প্রবীণরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি এবং বিভিন্ন কারণে তাঁরা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের স্থানে যেতে পারছেন না, তাই সম্ভব হলে বাড়ি থেকে তাঁদের নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা করার জন্য বলা হয়।