৭০০ বছরে কখনই যা ঘটেনি, করোনার কালবেলায় এবার তাই ঘটল। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বদলে দিয়েছে সব হিসেব-নিকেশ। করোনার সংক্রমণের কারণে এ বছর আর বিখ্যাত সুফি দরবেশ হজরত শাহজালালের মাজারে ওরস উৎসবের আয়োজন করা হয়নি। অন্যান্যবার যখন মাজার চত্বরে তিল ধারণের জায়গা থাকে না, সেখানে এবার খা-খা করছে গোটা মাজার চত্বর ও সংলগ্ন এলাকা। আর মন খারাপ ভক্তদের।
হজরত শাহজালালের মাজারের খাদেম সামুন মাহমুদ খান হতাশ কণ্ঠে বলেই ফেললেন, ‘৭০০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো শাহজালাল মাজারের ওরস হচ্ছে না। মুক্তিযুদ্ধের বছরও এখানে ওরস হয়েছে। কিন্তু এবার তা করা সম্ভব হলো না। কতটা কষ্ট হচ্ছে তা বলে বোঝাতে পারব না।’
আজ থেকে ৭১৭ বছর আগে ইসলাম ধর্মের প্রচারের জন্য সুদূর আরব থেকে সিলেটে এসেছিলেন হজরত শাহজালাল। তার সঙ্গে এসেছিলেন আরও ৩৬০ জন আউলিয়া। সিলেট শহরে প্রথম আজান ধ্বনিও দিয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর থেকে প্রতি বছরই ওরস উৎসবের আয়োজন করা হয়। আর সেই উৎসবে যোগ দিতে প্রতিবছরই দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষাধিক ভক্ত ছুটে আসতেন সিলেটে হজরত শাহজালালের মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে। ‘লালে লাল, বাবা শাহজালাল’ স্লোগানে মুখরিত হতো মাজার চত্বর। এ বছরেও গতকাল ও আজ রবিবার (অর্থাৎ ১১ ও ১২ জুলাই) বার্ষিক ওরস হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সব পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছে করোনা।
মাজারের খাদেম সামুন মাহমুদ জানিয়েছেন, প্রথমে ভক্ত ও আনুরাগী ছাড়াই নিয়মরক্ষার জন্য ওরস উৎসব পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। গত দুই সপ্তাহ আগে জনসমাগম ছাড়া মাজারের লাকড়ি তোড়া উৎসবেরও আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু ওই দিন কাউকে কিছু না জানালেও বহু অনুরাগী ও ভক্ত জড়ো হয়েছিলেন। ওই দিনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওরস উৎসব আয়োজনের আর ঝুঁকি নেওয়া হবে না। করোনার সংক্রমণ এড়াতে এছাড়া আর বিকল্প কোনও পথ খোলা ছিল না।’ এই মুহূর্তে।