জহির, লক্ষ্মীপুরঃ লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সৌদি প্রবাসীদের ঘরে একলা থাকা বৃদ্ধা মায়ের উপর আক্রমন করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ করেছে প্রবাসী সন্তানরা এবং তাদের পরিবার। এঘটনায় ৫ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করার পর ১জনকে আটক করতে সম্ভব হয় রায়পুর থানা পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে রায়পুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডস্থ মধুপুর রফিক মাষ্টারের বাড়িতে। অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন ঘটনাস্থলে গেলে (মরহুম) রফিক মাষ্টারের সহধর্মিনী চার সন্তানের জননী রাশেদা বেগম (৫০) ও মামলার এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী জানাযায়, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে তার বাড়ির পাশে বসবাসকারী নিজস্ব কিছু আত্নীয়-স্বজন তার জায়গা সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার চক্রান্তে প্রকাশ্যে এবং গোপনে তাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। স্বামী-হারা এই ৪ সন্তানের জননী অত্যন্ত আবেগপ্রবন ও কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান,গত ২৮ জুন ২০২০ইং তারিখ সন্ধ্যায় তার প্রতিবেশী আত্নীয়দের দীর্ঘদিনের গোপন চক্রান্তের সূত্রে জনৈক সুন্দরী বেগম (৩৫) নামের এক ভাড়াটে মহিলা খুনীকে দিয়ে তাকে চলেবলে কৌশলে এক পর্যায়ে গায়ে গুঁড়া মরিচ মেখে দিয়ে প্রকাশ্যে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করতে উদ্ব্যত হয়, এসময় রাশেদা বেগম কোনরকমে স্বরচিৎকার দিয়ে উঠলে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে হত্যা চেষ্টাকারী সুন্দরী বেগম রাশেদা বেগমের গলায় থাকা ১ ভরি ৮ আনা ওজনের একটি স্বর্নের চেইন (যার বাজার মূল্য একলক্ষ দশ হাজার টাকা) টান মেরে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এছাড়া বেশকয়েকবার তিনি (রাশেদা বেগম) একলা ঘরে থাকার সুবাধে তার ঘরের তালা ভেঙ্গে নির্জনে ঘরের অনেক মূল্যবান সম্পদও হাতিয়ে নেয় বলে জানান ষড়যন্ত্রকারীরা। ঘটনার দিন রাশেদা বেগম প্রাণনাশের মত ঘটনার বিপাকে পড়লে দেশে কর্মরত তার বড় ছেলে বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) সদস্য ইউছুফ আলীকে জানালে তিনি কর্মস্থল থেকে বাড়িতে এসে ৫ জনকে আসামী করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে রায়পুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং -৬ তারিখ ০৪/০৭/২০ইং ধারা-১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩০৭/৩৭৯/৫০৬ দন্ড বিধি। মামলার এজাহারে অভিযুক্ত আসামীরা হলেন সুন্দরী বেগম (৩৫), পিতা-মৃত আবদুল হক, সাইমন হোসেন (১৪), পিতা- আজম হোসেন উভয় সাং (স্থায়ী) উত্তর কেরোয়া মোল্লাবাড়ী, এবং অপর আসামীরা হলেন ফাতেমা বেগম (৩৭), স্বামী- আমির হোসেন। তারেক হোসেন (২০) পিতা -আমির হোসেন এবং আজম হোসেন (৪৫) পিতা – অজ্ঞাত।
অপরদিকে মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত ২ আসামী তারেক এবং ফাতেমা বেগম আগেই কোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়ে এখন নিশ্চিন্তে আছে। এবিষয়ে তারেকের কাছে জানতে চাইলে সে বলে আমি থানায় কাজ করি, থানার স্টাফদের জন্য প্রয়োজনে এটা সেটা এনে দেই। এইজন্য সে কোন মাসিক টাকা পায়না।
মামলার বাদী এবং অভিযোগকারী ইউছুফ বলেন অভিযুক্ত আসামী তারেক মাদক ব্যাবসাসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। সে অত্যন্ত চতুর এবং এসব অপকর্ম করেও সে পার পেয়ে যায় এবং সে নিজেকে থানার সোর্স বলে দাবী করে।
মামলার তদন্তকারি অফিসার এসআই নাসিম বলেন,প্রথম আসামীকে গতকাল (শুক্রবার) রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং শনিবার বিজ্ঞ আদালতে তাকে সোপর্দ করা হয়েছে।