বিশ্বে করোনায় যত লোক মারা যাবেন, তার থেকে ঢের বেশি মানুষ মরবেন পেটে খিদে নিয়ে। এখনই করোনায় মারা গিয়েছেন সাড়ে ৫ লক্ষেরও বেশি। বিশ্বের ২০টি বেসরকারি সংগঠনের সংযুক্ত মঞ্চ অক্সফ্যাম এমনই শঙ্কা জানিয়েছে। তাদের হিসেবে, বছরের শেষদিকে ভারত সহ দশটি দেশে খাদ্যের অভাবে মৃত্যু হবে দিনে ১২ হাজারের।
অক্সফ্যামের রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোভিড ১৯-এর জন্য বিশ্বের খিদের সঙ্কট গভীর হয়েছে। জন্ম নিচ্ছে ক্ষুধার নতুন নতুন হটস্পট। তারা পৃথিবীর ১০টি সবথেকে বেশি খিদের এলাকাকে চিহ্নিত করেছে। ভেনিজুয়েলা ও দক্ষিণ সুদান ইতিমধ্যেই মহামারীর ধাক্কায় আর্থিক সঙ্কটে রয়েছে। ইয়েমেনও রয়েছে এই খিদের হটস্পটের তালিকায়।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে আফগানিস্তানে ২৫ লক্ষ মানুষ দুর্ভিক্ষের কবলে ছিলেন। চলতি বছরে মে মাসে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ লক্ষ। ইয়েমেনেদুই তৃতীয়াংশ মানুষ চরম দারিদ্রের মধ্যে রয়েছেন।
দারিদ্র এতটাই প্রকট হয়ে উঠেছে যে অনেকেই অনাহারেই দিন কাটছে। অক্সফ্যামের সমীক্ষা বলছে যদি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় তবে প্রতিদিন ১২ হাজার মানুষ অনাহারে মারা যেতে পারেন। এই ঘটনা বিশ্বের কাছে যথেষ্ট উদ্বেগের ও আশঙ্কার বিষয়। করোনাকে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে মৃত্যুর হারকে ছাপিয়ে যাবে অনাহারে মৃত্যুর হার। করোনার থেকে দারিদ্রতার হারই আগামী দিনে বিশ্বে প্রকট হয়ে উঠবে বলেই জানাচ্ছে অক্সফ্যামের সমীক্ষা।
এছাড়া, তালিকায় রয়েছে ভারত, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলও। এই দেশগুলিতে লাখে লাখে মানুষ মহামারীতে গভীর বিপন্ন। তাদের মতে, কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা সত্ত্বেও মহিলারাই খিদেয় সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাঁরা অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক।
অক্সফ্যামের এক্সিকিউটিভ ডিরেকটর চেমা ভেরা বলেছেন, ইতিমধ্যেই সংঘাত, আবহাওয়া পরিবর্তন, অসাম্য ও খাবারের অভাবে দরিদ্র মানুষের জীবেন শেষ আশাও কেড়ে নিয়েছে। অন্যদিকে, উপরে রয়েছেন যাঁরা তাঁরা দিব্যি আছেন। খাবার ও পানীয়ের কোম্পানিগুলি প্রচুর লাভ করেছে মহামারীর এই সময়েই।