তুরস্কে আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণে প্রায় ১০০ জন আহত এবং ৪ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (৩ জুলাই) তুরস্কের উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ সাকারিয়ায় একটি আতশবাজি কারখানায় এই বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণ কী করে ঘটল, সে সম্পর্কে কেউ-ই নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি। উদ্ধারকাজ শেষ হওয়ার পরেই, তদন্ত হবে। কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে কোনওরকম গাফিলতি ছিল কি না, তদন্তকারীরা দেখবেন। তবে, প্রাথমিক তদন্তে এটি নিছক দুর্ঘটনা বলেই মনে করা হচ্ছে।
সাকারিয়ার গভর্নর সেটিন ওক্টে কালদিরিম জানান, বাজি কারখানার বিস্ফোরণে প্রায় ১০০ জন আহত হয়েছেন। প্রদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে তাঁরা চিকিত্সাধীন রয়েছেন।
কালদিরিম জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের সময় কারখানার ভিতরে ২০০জন কর্মী কাজ করছিলেন। ১১০ টন বিস্ফোরক সামগ্রী করাখানায় মজুদ ছিল।
এদিকে, তুরস্কের এনটিভি জানাচ্ছে, ৬০টির বেশি অ্যাম্বল্যান্স ও দু’টি হেলিকপ্টার অ্যাম্বুল্যান্সে করে, আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে, সেখানকার মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী আহতের সংখ্যা ৯০-এরও বেশি। জানা গিয়েছে, তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে, বিস্ফোরণে ৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানাচ্ছে, বিস্ফোরণের পর ওই আতশবাজি কারখানার আশপাশের বাতাস বারুদের তীব্র গন্ধ ও ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে। তুরস্কের রেড ক্রিসেন্টের সভাপতি কেরেম কিনিক স্থানীয় মানুষ জনকে বাড়িরা বাইরে বেরোতে নিষেধ করেছেন। ধোঁয়ায় থাকা রাসায়নিক থেকে স্বাস্থ্যের বড় ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। যে কারণে লোকজনকে বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
তুরস্কের বিপর্যয় ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ আতশবাজি কারখানার বিস্ফোরণকে ‘শিল্প দুর্ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। কারখানার ভিতর থেকে বিকিরণের কোনও উত্স মেলেনি বলেই তারা জানিয়েছে।
গত বছর ভারতে আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণে কমপক্ষে ২৩ জন মারা গিয়েছিলেন। পঞ্জাবের একটি আতশবাজি কারখানায় ওই বিস্ফোরণ হয়েছিল। বিস্ফোরণে জখম হয়েছিলেন আরও অন্তত ৩০ জন।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের এক বিকেলে পঞ্জাবের গুরদাসপুর জেলার বাটালায় একটি তিনতলা ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে আতশবাজি তৈরির কারখানায় বিস্ফোরণটি ঘটেছিল। বিকেল চারটে নাগাদ হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে। এক কিলোমিটার দূর থেকেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। বিস্ফোরণের অভিঘাতে কারখানার ৫০০ মিটার এলাকার মধ্যে শপিংমল ও বাড়িঘরের জানালার কাচ ভেঙে যায়।
এ ছাড়া একটি স্কুলভবন ও গুরুদুয়ারা-সহ কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারখানার কাছাকাছি পার্ক করে রাখা কয়েকটি গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। নিহতদের অধিকাংশই কারখানার কর্মী। ওই কারখানার এক মালিকও মারা যান। এ ছাড়া কারখানার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দুই পথচারীও বিস্ফোরণে নিহত হন। সুত্রঃ এই সময়।