প্রদীপ কুমার দেবনাথ, নাসিরনগর, রাহ্মণবাড়িয়া : ১৯১০ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের হাওর বেষ্টিত গুরুত্বপূর্ণ একটি থানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার নাসিরনগর থানা। ১৩ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ থানার অধীনে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ অধিবাসীর নিরাপত্তার গুরুদায়িত্ব পালন করছে এ থানাটি।
করোনাকালে লকডাউন নিশ্চিত করাই যেখানে দুরূহ সেখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার পুলিশকে একটির পর একটি ঘটনা সামাল দিতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত একটির পর একটি অনভিপ্রেত মারামারি, হানাহানি, সংঘর্ষ মোকাবিলা করেও রুটিন কাজ করতে হচ্ছে পুলিশকে। রাতদিন নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে ছুটতে হচ্ছে একটির পর একটি সমস্যা নিরসনে।
পুরো নাসিরনগর উপজেলার আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, করোনার লকডাউন নিশ্চিত করণ, বাজার মনিটরিং, প্রতি স্পর্শকাতর পয়েন্টে জন নিরাপত্তার জন্য পাহাড়া, সার্বিক আইন শৃঙ্খলার পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ, ইয়াবা কারবারি, গাঁজা ব্যবসায়ী, জুয়ারি, পলাতক আসামি গ্রেফতার সহ অসংখ্য অপরাধ দমনে অত্যন্ত দক্ষতা প্রদর্শন করে জনমনে আস্থা অর্জন করেছে নাসির নগর থানা পুলিশ।
চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, পারিবারিক ও সামাজিক অপরাধ দমন, চোরা কারবারি নিয়ন্ত্রণ, বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য দমন, সচেতনতামূলক কার্যক্রম ইত্যাদি অতি প্রয়োজনীয় কাজগুলো তারা বেশ দক্ষতার সাথে দীর্ঘদিন যাবত করে যাচ্ছে।
এই করোনাকালে সরকার ঘোষিত মানবিক সাহায্য বাস্তবায়ন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার সঠিক ভাবে প্রকৃত ব্যক্তিদের হাতে তুলে দিতে এমপি মহোদয়কে সহযোগিতা প্রদান, এ উপজেলার রাজনৈতিক সহনশীলতা বাস্তবায়নে মাননীয় সাংসদকে সর্বাত্মক সহযোগিতা, করোনা পরিস্থিতিতে এমপি মহোদয়কে সার্বক্ষণিক সাহচর্য প্রদান, সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করণ, অতিলোভী ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা, অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ জনগণের প্রয়োজনে বিরতিহীন সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন এ উপজেলার পুলিশ প্রশাসন। মানুষকে নিরাপদ রাখতে আজ নিজেরা আক্রান্ত হচ্ছে – তবু ছুটে চলছে তারা অবিরাম।
এ করোনাকালে বহু আলোচিত সহিংসতা প্রতিরোধ করতে হয়েছে এবং হচ্ছে নাসিরনগর পুলিশকে। এই করোনা মহাসংকটের মাঝেই গোকর্ণ, চাতলপাড়, সোনাতলা, কদমতলী, আশুরাইল, দাঁতমন্ডল, সূচীউড়া, শ্রীঘর, চাপরতলা ও কালীউতা বিভিন্ন ইস্যুতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। নাসিরনগর থানা প্রশাসন অত্যন্ত ধৈর্য্য ও দক্ষতার সাথে এসব নিয়ন্ত্রণ করে ও সাধারণ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করে। বিভিন্ন স্থানে এসব সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে অনেক পুলিশ সদস্য আহত হয়।
রুটিন কাজের পাশাপাশি জনগণের মাঝে করোনা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা, ছিনতাই ও ডাকাতি রোধে নির্ধারিত স্থানে টহল দেওয়া, জননিরাপত্তায় অতন্দ্র প্রহরীর মতো সার্বক্ষণিক বিরতিহীন কর্তব্য পালনের কারণে জনমনে আস্থা, বিশ্বাস ও স্বস্তির স্থান হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে নাসিরনগর থানা পুলিশ।
নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাওয়া পুলিশ প্রশাসনের উপর জনগণের আস্থা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে ‘পুলিশ জনগণের প্রকৃত বন্ধু, শত্রু নয়।’