প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড ১৯) পরীক্ষায় প্রতারণার অভিযোগ গ্রেফতার হয়েছিলেন ওভাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রধান নির্বাহী (সিইও) আরিফুল চৌধুরী। এ সংক্রান্ত মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার রিমান্ডও মঞ্জুর করেছেন আদালত। সেই রিমান্ডে পুলিশের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে যাচ্ছেন ওভাল গ্রুপের আরিফুল। পুলিশের কাছে মাদকদ্রব্য ইয়াবাও চেয়েছেন গ্রেফতার হওয়া জেকেজি হেলথকেয়ার নামে পরিচিত প্রতিষ্ঠানের এই সিইও।
পুলিশের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র থেকে জানা যায়, থানার হাজতখানায় বসেও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন ওভাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক চৌধুরী। হাজতখানায় থাকা অন্য আসামিদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করেন। হাজতখানার লাইট ভেঙে ফেলেন। ছিড়ে ফেলেন সিসি ক্যামেরার তার। পুলিশের কাছে তিনি মাদকদ্রব্য ইয়াবাও চেয়েছেন।
সূত্র জানায়, আটকের পর থেকেই নানাভাবে পুলিশের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন আরিফুল চৌধুরী। তাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য কয়েকটি গাড়ি করে আসে তার কর্মীরা। পুলিশ কঠোর অবস্থানে থাকায় তারা সুবিধা করতে পারেনি।
সূত্র আরও জানায়, খারাপ ব্যবহার করলেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই মামলা তদন্ত করছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন হুমায়ুন নামে জেকেজির এক কর্মকর্তা। নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) জাল সনদ বানানো, নমুনা সংগ্রহ করে তা ফেলে দেওয়া ও বাসায় গিয়ে অনৈতিকভাবে নমুনা সংগ্রহ করার তথ্য তিনি এরইমধ্যে স্বীকার করেছেন।
জেকেজির আরেক কর্মকর্তা সাঈদ চৌধুরী আরিফুল হকের মাদকাসক্ত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে জানিয়ে সূত্র বলে, আমরা অভিযানে গিয়ে জেকেজি হেলথ কেয়ারের কার্যালয়ে করোনা সনদ জাল করার বিভিন্নরকম প্রামাণিক দলিল ছাড়াও ইয়াবা খাওয়ার সরঞ্জামাদি পাই। তার আচরণ এতটাই ঔদ্ধত্যপূর্ণ যে তার সঙ্গে সেলে যদি কাউকে রাখা হয় তবে তার সঙ্গেও খারাপ আচরণ করে।
এ বিষয়ে তেজগাঁও জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশীদ জানান, ‘আমরা যাদের প্রথমে আটক করি তারা বাসায় গিয়ে অনৈতিকভাবে নমুনা সংগ্রহ করার বিষয়টি স্বীকার করে। এ ব্যবসা করতে গিয়ে তারা যে করোনার জাল সনদ বানাতো তাও স্বীকার করে। তারা এ বিষয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। তারা বলে আরিফুল হক চৌধুরীর অফিসে তারা গ্রাফিক্সের কাজ করত। সেখান থেকেই তারা জাল সনদ বানাতো।’
উল্লেখ্য, ২৩ জুন জেকেজি হেলথ কেয়ারের সিইও আরিফুল হক চৌধুরী সহ আরও পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ। ২৪ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেঁজগাও থানার এসআই দেওয়ান মো. সবুর আসামিদের আদালতে হাজির করেন। দুই আসামি স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড এবং অপর চার আসামির ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।