এমন কি কি বিষয় রয়েছে যা একজন পুরুষের মধ্যে একজন বা বহু নারী দেখেন? হ্যাঁ, এটাও ঠিক সবার পছন্দ এক নয়, তাহলেও কিছু বিষয় এমন রয়েছে, যা বিশ্বজনীন, যা পুরুষের মধ্যে খোঁজেন নারীরা।
প্রথম দর্শন হয়তো কয়েক মুহূর্তের ঘটনা, কিন্তু এতেই নির্ধারিত হয়ে যেতে পারে সম্পর্কের গতিপথ। তাই একজন পুরুষ যদি জানেন যে, নারীরা পুরুষের ঠিক কোন বিষয়গুলো প্রথম দর্শনেই লক্ষ করেন, তা হলে সে বিষয়ে সচেতন থাকতে পারেন তিনি।
অনেক নারীই প্রথম দেখার কয়েক মিনিটেই একজন পুরুষকে মেপে ফেলার চেষ্টা করেন। দর্শনদারির ভিত্তিতেই এই মাপামাপি। উচ্চতা, ওজন এবং সামগ্রিক শারীরিক আকর্ষণীয়তার পাশাপাশি পুরুষের হাসি, রসবোধ ও আত্মবিশ্বাস লক্ষ করেন নারী।
পুরুষের মনোদৈহিক যে বিষয়গুলো নারীরা প্রথম দেখাতেই লক্ষ করেন, সেগুলো হল-
শারীরিক আকৃতি:
নারী প্রথমেই যা কিছু খেয়াল করেন সে তালিকার প্রথমদিকেই আছে উচ্চতা এবং ওজন। কোনো পুরুষ খুব বেশি লম্বা, মোটা বা খাটো হলে তাঁর এই শারীরিক গঠনের কারণে শুরুতেই তাঁর বিষয়ে একটা সিদ্ধান্তে চলে আসতে পারেন কোনো কোনো নারী।
ফলে তাঁর অন্য মানবিক গুণাবলি লক্ষ করার বিষয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন একজন নারী। অবশ্য নারী তাঁর নিজের উচ্চতা এবং ওজনের নিরিখেই পুরুষের এই শারীরিক বৈশিষ্ট্যের গ্রহণযোগ্যতা বিচার করেন।
কন্ঠ:
কন্ঠ। দেখা যায় না। শোনা যায়, ভাবা যায়, অনুভব করা যায়। কথায় আছে ‘কণ্ঠে জাদু আছে’, একথা সর্বত সত্যি, যার কন্ঠে জাদু আছে, সে জগতকে মোহিত করে। কন্ঠে সুর, কণ্ঠে কথা আর তা দিয়েই প্রথম আকর্ষণ, প্রথম ভাল লাগা।
আকর্ষণী ক্ষমতা:
চেহারার সৌন্দর্য হচ্ছে সেই গুণের নাম যা জন্মসূত্রে পাওয়া। কিন্তু কেবল সুন্দর হলেই তো হবে না! একজন পুরুষ নিজের প্রতি নিজে কতটা যত্ন-আত্তি করেন, সেটা খেয়াল করেন নারী। চুল, নখ থেকে শুরু করে কাপড়চোপড় এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় রাখেন নারীরা।
একজন পুরুষ যদি নিজের এইটুকু দেখভাল করতে না পারেন, তা হলে তাঁর অন্য গুণাবলি খুঁজে দেখার জন্য খুব একটা কষ্ট করতে রাজি হবেন না নারী। নিজেকে উপস্থাপনের শিল্পেই আকর্ষণী ক্ষমতা দেখানোর সুযোগ পেতে পারেন একজন পুরুষ।
মুখের হাসি:
একনজরে দেখে নিয়ে মেপে ফেলার পর পুরুষের মুখের হাসি দেখার অপেক্ষায় থাকেন নারী। হাসবার ক্ষমতা, বিশেষত দেখা হওয়ার প্রথম কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুরুষের হাসি নারীর কাছে একটা স্বাগত বার্তার মতো।
অবশ্য হাসবার আগে মাথায় রাখতে হবে নিজের দাঁতের কথাও। অপরিচ্ছন্ন দাঁত নিয়ে কোনো নারীর সামনে হাসলে লাভের চেয়ে লোকসানই বেশি হবে। আর দাঁতের অন্য কোনো সমস্যা থাকলেও সেটা সারাতে দন্ত্য চিকিত্সকের কাছে ঘুরে আসাই ভালো।
পোশাক পরিচ্ছদ:
কথায় আছে, ‘যো দিখতা হে, ওহি বিকতা হে’। কথাটায় ১০০ শতাংশ সম্মতি আপনি না দিলেও কিছুটা আমল দিতেই হবে। সুদর্শন পুরুষ কোন পোশাকে নিজেকে কতটা সামনে নিয়ে আসছে এও দর্শন। ‘পাঞ্জাবীতে কালবেলার অনিমেষদের পছন্দ করবেন মাধবীলতারাই’, এটা মিথ হলেও বর্তমানের অনিমেষরা কিন্তু পাঞ্জাবীর সঙ্গে সাদা ফোতুয়ার বদলে ডেনিম জিন্সেও নারীর নজর কাড়ছে।
সঙ্গী হিসেবে কেমন:
নারীর জীবনের শ্রেষ্ঠ সঙ্গীদের মধ্যে প্রথম-বাবা, দ্বিতীয়-প্রেমিক, তৃতীয়-বন্ধু, চতুর্থ-স্বামী, পঞ্চম-ছেলে, ষষ্ঠ-নাতি। এমনটা সবক্ষেত্রে হয় সেটা কেউই দাবি করবে না। তবে এমনটা হয়ে থাকে। আর এই ছয়ের মধ্যেই নারী খোঁজেন তাঁর শ্রেষ্ঠ সঙ্গী। যার কাঁধে নারী মাথা রাখতে পারে নির্দিধায়, যার বুকে মাথা রেখে অবলীলায় ভিজিয়ে দিতে পারে তাঁর জামা, যার ওষ্ঠে ওষ্ঠ রাখতে নারীর কুণ্ঠাবোধ একেবারেই হবে না, সেই পুরুষই নারীর মনের পুরুষ।
রসবোধ:
পুরুষের রসবোধ নারীর আরাধ্য। কাউকে হাসিমুখে থাকতে দেখলে অন্যের ভালো লাগবে, এটাই স্বাভাবিক। আর যদি মানুষটি অন্যকে হাসাবার ক্ষমতা রাখেন, তা হলে তো কথাই নেই।
সঙ্গীর সঙ্গে মৃদু কৌতুক করা বা কোনোভাবে তাঁকে মজা দেওয়াকে অবশ্যই পুরুষের মধ্যে একটি আরাধ্য বিষয় হিসেবে ভাবেন নারীরা।
আর যে পুরুষ হাসিমুখেই একটা খারাপ পরিস্থিতিতেও খাপ খাইয়ে নিতে পারেন বা দুর্দশা নিয়েও কৌতুক করতে পারেন, তাঁর জন্য তো মুক্তোর মালা নিয়ে বসে থাকবেন নারী।
আত্মবিশ্বাস:
আত্মবিশ্বাসী পুরুষের প্রতিই প্রবল আকর্ষণ অনুভব করেন নারী। দেখার প্রথম কয়েক মিনিটের মধ্যেই একজন পুরুষের আত্মবিশ্বাসের স্তর বোঝার চেষ্টা করেন নারী।
পাশাপাশি ওই পুরুষটি তাঁর চারপাশের পরিবেশ পরিস্থিতিতে কতটা প্রভাব ফেলছেন বা কেমনভাবে তা মোকাবিলা করছেন, সেটা বোঝার চেষ্টা করেন নারীরা।
তবে পুরুষকে বুঝতে হবে দাপট দেখানো আর আত্মবিশ্বাস এক কথা নয়। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো একজন পুরুষ কতটা স্পষ্ট এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম, তা বিবেচনা করেন নারীরা।
আলাপচারিতা:
পুরুষেরা সাফল্যের সঙ্গে সমাজে এমন ধারণা প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন যে তাঁরাই শক্তিশালী এবং তাঁরা কম কথা বলেন। তাই অনেক নারীই হয়তো আশা করেন না যে একজন পুরুষ সারাক্ষণ কথা বলতে থাকবেন। তবে যেটা লক্ষ রাখা দরকার তা হলো, সঙ্গী পুরুষটি নারীটির মনোযোগ ধরে রাখতে পারছেন কি না।
একজন পুরুষ অনেকটা সময় ধরে মনোযোগ ধরে রাখতে পারলে তাঁর প্রতি শারীরিকভাবে আকর্ষণ অনুভব করতে পারেন নারী। তাই কথা বলুন প্রাণ খুলে, নিজেকে নিজের মতো করেই উপস্থাপন করুন আলাপচারিতায়।