গত ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি হয়েছে সাড়ে আট শতাংশেরও বেশি। অর্থনীতিবিদদের মতে, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ার পাশাপাশি কোনো কোনো ক্ষেত্রে চীনের হারানো ক্রেতাদের ক্রয় আদেশ পাওয়ায় পোশাক রপ্তানি বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের প্রতি আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের আস্থা বেড়েছে।
বিজিএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, বায়ারদের কনফিডেন্স আমরা অনেক বাড়াতে পেরেছি। গত পাঁচ বছর আমরা কর্মক্ষেত্রের সেফটির উপর কাজ করেছি। এতে প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া গ্রিন ফ্যাক্টরি করা হয়েছে, এনার্জি এফিসিয়েন্ট ফ্যাক্টরি করা হয়েছে, এনভায়রনমেন্ট ফ্রেন্ডলি ফ্যাক্টরি করা হয়েছে। এছাড়া যন্ত্রপাতিও উন্নত করা হয়েছে।
সবচে বড় বাজার জার্মানিতে গত ছয়মাসে ওভেন পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে ১৮ শতাংশ, নিট পণ্যে তা প্রায় ১১ শতাংশ। ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, পোল্যান্ড,সুইডেন, কানাডাসহ কয়েকটি দেশে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি দুই অংক ছাড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে জিএসপি সুবিধাবঞ্চিত মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১৯ শতাংশ। অপেক্ষাকৃত নতুন বাজারেও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি গড়ে ৩৬ শতাংশের উপরে।
অর্থনীতিবিদ ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, টাকার অবমূল্যায়ন আমাদের রফতানিকারকদের কিছুটা এক্সচেঞ্জ রেটে নেগোশিয়েট করার কিছুটা সুবিধা দিয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছিল, চীন থেকে কিছু অর্ডার অন্যান্য দেশে যাচ্ছে, তার কিছু অংশ বাংলাদেশও পাচ্ছে। সাম্প্রতিককালে তার কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব আমরা আমাদের রফতানিকারকদের মাঝে দেখতে পাচ্ছি।
বেশকিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও রপ্তানির এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২১ সাল নাগাদ, পোশাকশিল্পের রপ্তানি আয় ৫০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছাবে বলে আশা করেন ব্যবসায়ীরা।
দেশের সবচে শ্রমঘন এ শিল্প সামনের দিনে আরো সম্প্রসারিত হওয়ার সুযোগ আছে, তবে সেজন্য শিল্পাঞ্চলে স্থিতিশীল পরিবেশ আর প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সুবিধা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন পর্যবেক্ষকরা।