এস. এম. মোর্তজা আলম:: ময়মনসিংহে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভুল অপারেশনের অভিযোগে ক্লিনিকের তিন মালিককে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। আটককৃত ক্লিনিক মালিকরা হলেন রেজাউল কবির মুরাদ, আজাহার মাহমুদ জুয়েল ও আশরাফুর রহমান রনি।
তবে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানান, ভুল অপারেশনের কারণে ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়নি। বরং, মায়ের পেটেই ঘটনার দিনের আগেই ওই নবজাতকটি মারা গিয়েছিল। শিশুটির শরীরে পচন ধরায় ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে।
কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মনসুর আহমেদ জানান, রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সদর উপজেলার ক্যল্যাণপুর গ্রামের পোশাক শ্রমিক হারুন অর রশিদের স্ত্রী জান্নাত বেগমের (২২) প্রসব ব্যাথা নিয়ে শহরে এলে দালালের খপ্পরে পড়ে প্রসূতিকে শহরের খৃষ্টপুর রেলগেইট সংলগ্ন পরশ (প্রাইভেট) হাসপাতালে ভর্তি করান। ১৬ হাজার টাকার সাব্যস্ত করে রাতেই সিজারের মাধ্যমে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। শিশুটি জন্মের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জান্নাত বেগমের মৃত কন্যাশিশু হয়েছে বলে প্রসূতির পরিবারকে জানায় এবং মৃত শিশুকে দেখাতে গড়িমসি করে।
একপর্যায়ে প্রসূতির পরিবারের চাপে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আধাঘন্টা পর মৃত শিশুকে স্বজনদের হাতে তুলে দেন। এসময় নবজাতকের পিঠে ও গালে ধারালো অস্ত্রের কাটার চিহ্ন দেখা যায়।
হারুন অর রশিদ অভিযোগ করেন, তাদের নবজাতককে ভুল অপারেশন করে হত্যা করো হয়েছে।
তিনি জানান, নবজাতকের গায়ে আঘাতের কারণ জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি। এরপর নবজাতকের বাবা মৃত শিশুকে নিয়ে সাবেক ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের ভাগ্নে বুলবুল আহমদের বাসায় ছুটে গিয়ে বিষয়টি তাকে অবহিত করা হয়। পরে এ ঘটনার বিচারের দাবিতে ডিবি কার্যালয়ে যাই। সেখান থেকে মৃত শিশুকে নিয়ে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে যান। পরে কোতোয়ালী থানায় গিয়ে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে পরশ (প্রাইভেট) হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক এফ ডি আমিন শিশির বলেন, শিশুটি জন্মের ৩/৪দিন আগেই মারা গেছে। এজন্য শিশুটির শরীরে পচন ধরায় ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে।একই বক্তব্য দেন পরশ (প্রাইভেট) হাসপাতালের পরিচালক রেজাউল কবির মুরাদ।
সিভিল সার্জন ডা. এ কে এম আব্দুর রব জানান, পরশ (প্রাইভেট) হাসপাতালের রেজিস্ট্রশন নেই। তবে শিশু মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী কিনা তদন্ত করা হবে।
কোতোয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনসুরুল আলম জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরশ (প্রাইভেট) হাসপাতালের তিন পরিচালক রেজাউল কবির মুরাদ, আজাহার মাহমুদ জুয়েল ও আশরাফুর রহমান রনিকে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।