আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির পক্ষে এই বাজেটের ব্যাপকতা ও সম্ভাবনা অনুধাবন করা সম্ভব নয়, এটাই স্বাভাবিক।
আজ শুক্রবার (১২ জুন) ২০২০-২১ সালের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর নিজ বাসভবন থেকে দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
নিজ বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে যোগ দেন তিনি। দলীয় কার্যালয়ে শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি এমপি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
কাদের বলেন, ‘বাজেট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে কোনো ধরনের বিচার-বিশ্লেষণ না করে বিএনপি আগেভাগে প্রস্তুত করা ও মনগড়া পুরনো ও গতানুগতিক গল্পের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। বিএনপির নেতারা গত ১১টি বাজেট ঘোষণার পর বাজেট নিয়ে নানা ধরনের মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন এবং বরাবরই বলেছেন, বাজেট বাস্তবায়ন হবে না।’
তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে- বিএনপি নেতাদের এ ধরনের বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করতে দেখা গেছে। এবারও তারা সংকট জয়ের সুপরিকল্পিত উদ্যোগ এই বাজেটের বিরুদ্ধে চিরায়ত ভঙ্গিতে মিথ্যাচার করছে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় মাত্র ৫০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রণয়ন করেছিল। আর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকের বাংলাদেশে শুধু স্বাস্থ্যখাতে ৪১ হাজার ২৭ কোটি টাকা এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে।’
সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, এবারের বাজেট ভিন্ন বাস্তবতায়, ভিন্ন প্রেক্ষাপটে প্রণীত। এ বাজেট করোনার বিদ্যমান সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দেওয়ার বাস্তবসম্মত প্রত্যাশার দলিল। করোনা ভাইরাসে সৃষ্ট সংকটময় পরিস্থিতিকে সম্পূর্ণভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে; সংকটকালীন ও সংকট পরবর্তী সম্ভাব্য অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার গতিপথ নির্ণয়ের লক্ষ্যকে সামনে রেখেই প্রণিত হয়েছে এবারের বাজেট। যা জীবন-জীবিকার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনা সরকারের সময়োচিত সাহসী চিন্তার ফসল। গতানুগতিক ধারার সঙ্গে ‘আউট অব বক্স’ চিন্তার সমন্বয় করে সংকট জয়ের নবউদ্যোম সৃষ্টিতে এই বাজেট পেশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রকোপে বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতিতে ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথ পরিক্রমায় এটি যুগোপযোগী ও জনকল্যাণমুখী বাজেট।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন, সব দিক বিবেচনায় নিয়ে করোনার কবল থেকে ‘অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের’ এক ভারসাম্যপূর্ণ বাজেট হচ্ছে এবারের বাজেট। এটি একটি জনবান্ধব ও জীবনঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক পরিকল্পনা। যার মাধ্যমে দেশের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য উৎসাহ পাবে। এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। বাজেটে বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। কর্মসংস্থানের ধারাবাহিকতার সামঞ্জস্য রাখা এবং ভবিষ্যত অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রাখতে মেগাপ্রকল্পসমূহ চলমান রাখা হয়েছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহেও ২০.২৫ মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১১ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেটের শিরোনাম করা হয়েছে ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ভবিষ্যত পথ পরিক্রমা’। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তাবিত বাজেটকে একটা আপৎকালীন বাজেট বলে অভিহিত করেছেন অর্থমন্ত্রী।