২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপিত হয়েছে জাতীয় সংসদে। মাননীয় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল আজ জাতীয় সংসদে ৫০ মিনিটের বক্তৃতায় প্রায় ৪ লক্ষ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন।বাজেট নিয়ে যথারিতি আলোচনা এখন তুংগে। সরকারী দল উত্থাপিত বাজেটকে গনমূখি দাবী করবে আর বিরোধী দল বলবে গনবিরোধী। পাল্টাপাল্টি বিতর্ক সব বাজেটের পরেই শোনা যায়।রাজনৈতিক নেতারা ছাড়াও বাজেট আলোচনায় যুক্ত হন অর্থনীতিবিদ আর ব্যবসায়ী নেতারাও। কখনোই বাজেট প্রশংসিত হয়নি, এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বাজেট বিল জাতীয় সংসদে পাশ হওয়ার আগে পর্যন্ত এই আলোচনা চলবে। আমি অর্থনীতি বুঝিনা, বাজেটের বিষদ আলোচনা করার যোগ্যতা আমার নেই। কিন্তু করোনার কারনে উদ্ভুদ বাস্তবতাকে সামনে রেখে এবারের বাজেটে প্রত্যাশাটি ছিল অনেক। জানার বিষয় ছিল সাধারন মানূষের প্রত্যাশা পুরন হলো কিনা! এবার বাজেটের প্রতাশার জায়গাটি ছিল স্বাস্থ্য আর কৃষিখাত। করোনার কারনে স্বাস্থ্যখাতের সংস্কার অনুভুত হয়েছে আর কৃষি উৎপাদন দেশকে রক্ষা করেছে। কৃষিখাতের গুরত্ব প্রত্যাশীত ছিল। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নের দাবী ছিল আগে থেকেই,করোনা সেই দাবীটি জোরদার করেছে। বাজেটে দুটি খাতই গুরত্ব পেয়েছে। দেশে উৎপাদিত পন্যের মূল্য কমিয়ে আমদানীকৃত পন্যের মুল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে উৎসাহিত হবে দেশীয় উৎপাদন। সমগ্র বিশ্বেই করোনা ভাইরাস স্বাস্থ্য ব্যবস্থ্যাকে বদলে দিয়েছে, বাংলাদেশে আরো বেশী। অলোচকরা অনেকেই স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্ধ বৃদ্ধির দাবী করেছেন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় থোক বরাদ্ধেরও সমালোচনা করেছেন অনেকে। বরাদ্ধ বৃদ্ধির চেয়ে ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করন বেশী প্রয়োজন। বাজেটে তা প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রবৃত্তির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হলেও বাস্তবায়ন নির্ভর করবে আগামী কয়েক মাসের করোনা পরিস্থিতির উপর। রপ্তানী বানিজ্য ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে, তা স্বচল নাহলে রপ্তানী খাতের লক্ষ্যমাত্রা প্রভাব ফেলবে উত্থাপিত বাজেটের উপর। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পুরন করাই এখন সরকারের বড় দায়িত্ব হবে। সবচাইতে লক্ষ্যনীয় বিষয়টি ছিল কর শিথিল করা। সব বাজেটেই কর শুধু বাড়ে, এবার বেশ কয়েকটি পন্যের উপর কর শিথিল করা হয়েছে। কৃষিতে সরকারের নজরদারি এবং কৃষি সরঞ্জামের আমদানী শুল্ক শিথিল করে উৎসাহিত করা হয়েছে কৃষিখাতকে। বিলাসি পন্যের আমিদানী শুল্ক বৃদ্ধি যথার্থ মনে হয়েছে বিশেষকরে গাড়ীর শুল্কবৃদ্ধি ছিল বাস্তব সম্মত। একটি বিষয় অনেকেই উল্লেখ করেছেন, সব খাতে ব্যয়ের স্বচ্ছতা আর দায়বদ্ধতা, আমিও সহমত পোষন করি। কোভিড- ১৯ এর এই বাস্তবতায় এর চেয়ে ভাল বাজেট সম্ভবও ছিলনা। প্রতিশ্রুতিপ্রাপ্ত বিদেশী সাহায্যকেও বাজেটের লক্ষ্যমাত্রায় যুক্ত করা হয়েছে যৌক্তিকভাবেই। আলোচনা হবেই তবে, বর্তমান বিশ্বপরিস্থিতি মোকাবেলায় উত্থাপিত বাজেট ভাল বাজেট বলতেই হবে। দেখার বিষয় খাতওয়ারি ব্যবস্থাপনাটি কতটা স্বচ্ছ করা যায়। মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
রাজনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক
টরেন্টো, কানাডা
১২ ই জুন ২০২০।