আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন তার মালিকানাধীন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘এলান কর্পোরেশন’-এর বিরুদ্ধে মহাখালী ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের আনা প্রতারণা ও ভুয়া কাগজ ব্যবহারের অভিযোগের সাথে তার নাম জড়ানোর প্রতিবাদ করেছেন।
অনুসন্ধানে কাগজপত্রে দেখা গেছে, মালিকানা তার হলেও ব্যবসায়িকভাবে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। ‘ব্যবসায়িকভাবে কোন ধরনের দায়দায়িত্ব না নেওয়া’র শর্তে লিখিত অঙ্গীকারনামা নিয়ে আরেকজনের হাতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্বভার তুলে দিয়ে নিজেই প্রতারণা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় এই আওয়ামী লীগ নেতা।
অনুসন্ধানে আরো দেখা গেছে, ‘এলান কর্পোরেশন’-এর নাম ব্যবহার করে ব্যবসা করতেন ঢাকার হাজারীবাগের ভাগলপুর লেনের তাজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অভিযোগে গত ২৮ মে এই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারও করেছে ঢাকার বনানী থানার পুলিশ। তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
আমিনুল বলেছেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সার্জিক্যাল মাস্ক আমদানি করতে গিয়ে প্রতারণা ও ভুয়া কাগজ ব্যবহারের অভিযোগ আনলেও তার প্রতিষ্ঠানটির সম্পূর্ণ দায়িত্বে ছিল তাজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। এমন কি ঐ ব্যক্তি লিখিত অঙ্গীকার নামা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নেন।
গত ২৫ মার্চ ‘এলান কর্পোরেশনের’ মূল মালিক আমিনুল ইসলাম ও তাজুল ইসলাম নামের ওই ব্যক্তির মধ্যে একটি অঙ্গীকারনামা দলিল সম্পাদিত হয়। সেখানে ওই তারিখ থেকে ‘এলান কর্পোরেশন’ এর নাম ব্যবহার করে ব্যবসা পরিচালনা ও তার সমস্ত দায়-দায়িত্ব বহন করার অঙ্গীকারনামা দেন তাজুল ইসলাম।
মহাখালীর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর গত ১৮ মে ঢাকা শুল্ক বিভাগ থেকে মাস্ক খালাসের জন্য অনাপত্তিসূচক সনদ দেয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে। কিন্তু এরপরই আবার ভুয়া কাগজপত্র দেওয়ার অভিযোগে সেই অনাপত্তি সনদ বাতিলও করে।
প্রশ্ন উঠেছে, ১৮ মের আগে কী ধরনের যাচাই-বাছাই করে সনদ দিয়েছিল? তাছাড়া ভুয়া কাগজপত্র সরবরাহের অভিযোগ তুলেছে মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে, আমদানিকারকের বিরুদ্ধে নয়।
কিন্তু ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর মামলা করেছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এলান কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে।
এ প্রসঙ্গে এলান কর্পোরেশেনের মূল স্বত্ত্বাধিকারী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেছেন, ‘সরল বিশ্বাসে আরেকজনের হাতে অঙ্গীকারনামা নিয়েই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্বভার তুলে দিয়েছিলাম। তাতেই শিকার হলাম প্রতারণার।
আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক জীবনে আমি কখনও অন্যায় কোনো কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না এমনকি মাস্ক কিংবা এই ধরনের কোনো কাজের জন্য আমি কোথাও প্রভাব খাটানো তো দূরের কথা, বিষয়গুলো সম্পর্কে কিছু জানতামও না। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে, কোনো ধরনের গর্হিত কাজে আমার সামান্যতমও সংশ্লিষ্টতা আছে, বা কোনো কাজ নিয়ে দেওয়ার জন্য একটি ফোনও করেছি— সেক্ষেত্রে যে কোনো শাস্তি আমি মাথা পেতে নেবো।’