প্রদীপ কুমার দেবনাথ: বাংলাদেশের সামগ্রিক শিক্ষা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে ৯৭% অবদান বেসরকারি শিক্ষার। অথচ স্বাধীনতার এত বছর পরও বেসরকারি শিক্ষক/কর্মচারীগণ পাহাড়সম বৈষম্য, অবহেলা আর বঞ্চনার স্বীকার। এ অবস্থা উত্তরণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (নজরুল)। তারই ধারাবাহিকতায় আজ ১৭ মে ২০২০ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে এক চিঠি প্রেরণ করেন সমস্ত বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণের জন্য।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের মুখপাত্র নজরুল ইসলাম রনি এবং বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির মহাসচিব মো. মেজবাহুল হক প্রিন্সের স্বাক্ষরিত ঐ চিঠিতে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষকদের চরম বেতন বৈষম্যের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, শিক্ষকরা সামান্য বেতনে চরম অর্থ কষ্টে দিন কাটায়। শিক্ষকদের পরিবারের ভরণপোষণ ও অন্যান্য চাহিদা পূরণ এ স্বল্প বেতনে কখনোই সম্ভব নয়। তাছাড়া বর্তমানে করোনার ভয়াবহ ছোবলে সবাই গৃহবন্দী। অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছে এ স্বল্প বেতনধারী শিক্ষকগণ।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয় নামেমাত্র ১০০০ টাকা বাড়িভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা দেওয়া হয় এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক/কর্মচারীদের। এছাড়া দীর্ঘ ১৬ বছরেও ২৫% উৎসব ভাতা থেকে উত্তরণ হয়নি। ২০১৬ সালে শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেড প্রদানের কথা বলা হলেও আজ অবধি তা করা হয়নি। তাছাড়া বদলী ব্যবস্থা না থাকায় স্বল্প বেতনে বাড়িভাড়া, পারিবারিক ব্যয়ভার মিটানো শিক্ষকদের জন্য কষ্টসাধ্য। কোন সহায়ক শিক্ষা ভাতা না থাকায় শিক্ষকদের কষ্টের মাত্রা আরও তীব্র।
চিঠিতে আরও বলা হয় যে সামান্য বেতন শিক্ষকরা পায় তা থেকে অবসর ও কল্যাণ তহবিল ১০% কেটে নেওয়ার পর অল্প পরিমাণ অর্থ দিয়ে বাড়ি ভাড়া, পারিবারিক খরচ মেটানো সম্ভব নয়।
তাই, এ বাজেটেই জাতীয়করণের অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে বেসরকারি শিক্ষকদের প্রতি মহানুভবতা দেখাবেন বলে আশা করা হয়।