আজ ২১ রমজান। আজ থেকে মাহে রমজানের শেষ দশকে এসে পড়েছি। নাবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, রমজানের প্রথম দশদিন রহমত, দ্বিতীয় মাগফেরাত ও শেষ ভাগ হচ্ছে দোজখের আগুন থেকে মুক্তি লাভ।
আসলে মানবজীবনে চাওয়া-পাওয়ার অন্ত নেই। দুনিয়াটা হচ্ছে আখিরাতের শস্যক্ষেত্র। এখানে যে যেমন কাজ করবে পরকালে সে তেমন ফল পাবে। আখিরাতে বিচারের পর যারা পৃথিবীতে সত্ কাজ করেছে তারা আখিরাতে পাবে জান্নাত আর যারা এখানে পাপকর্ম করেছে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম।
রমজানের প্রতিটি মুহূর্তই মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ। তবে শেষ দশকের গুরুত্ব বেশি। কেননা এই অংশে রয়েছে চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তা হলো লাইলাতুল কদর, ইতিকাফ, জুমাতুল বিদা ও সাদাকায়ে ফিতর।হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত হুজুর সা. বলেছেন, রমজানের প্রথম দশ দিন রহমত, দ্বিতীয় দশদিন মাগফেরাত ও তৃতীয় দশদিন মুক্তির।হাদিসে এসেছে রাসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশ দিনে এতো মেহনত করতেন, যা তিনি অন্যান্য সময় করতেন না।’ (মুসলিম : ১১৭৫)আরেক হাদিসে এসেছে রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ দশ দিনে ইতিকাফ করে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করতেন এবং অন্যদেরও উৎসাহ দিতেন। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজী প্রতি বছর রমজানের শেষ দশ দিন ইতিকাফ করতেন। ইন্তেকালের বছর শেষ ২০ দিনই ইতেকাফে ছিলেন (সহীহ বুখারী ৪৯৯৮)।হজরত জাকারিয়া (র.) বলেন, রহমত, মাগফেরাত ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি এই তিন অংশের মধ্যে পার্থক্য এই যে, মানুষ তিন প্রকারের হয়। এক, ওই সমস্ত লোক যাদের গোনাহ নেই, এই সমস্ত লোকের জন্য তো রমজানের শুরু থেকেই রহমত এবং নেয়ামত ও পুরস্কারের বৃষ্টি বর্ষণ শুরু হয়ে যায়।দ্বিতীয় প্রকার, সেসব মানুষ যারা কম গোনাহগার; তাদের জন্য রমজানের কিছু অংশ রোজা রাখার পর এই রোজার বরকতে ও বদলায় মাগফেরাত হয়।আর তৃতীয় প্রকার, সেসব মানুষ যারা বেশি গোনাহগার, তাদের জন্য রমজানের বেশিরভাগ রোজা রাখার পর জাহান্নাম থেকে মুক্তি হয়। আর যাদের জন্য রমজানের শুরু থেকে রহমত ছিল এবং আগে থেকে তাদের গোনাহ মাফ হয়েছিল, তাদের জন্য যে কী পরিমাণ আল্লাহর রহমতের স্তূপ লেগে যাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রমজানের শেষ দশদিন শুরু হতো, তখন রাসুলুল্লাহ সা. সারা রাত জেগে থাকতেন। এমনকি তার আহলিয়াকেও সজাগ করতেন এবং ইবাদতের অত্যাধিক চেষ্টা করতেন।তাই প্রত্যেকের উচিত শেষ দশদিনের রাতগুলো এবাদতের মাধ্যমে কাটিয়ে দেয়া। সব ধরনের পাপের কাজ থেকে বিরত থাকা দরকার।