প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন আমাদের সরকারি অফিস-আদালত সব সীমিত আকারে আমরা চালু করে দিচ্ছি, যাতে মানুষের কষ্ট না হয়। সামনে ঈদ। ঈদের আগে কেনাকাটা বা যা যা দরকার সেগুলোও যেন মানুষ করতে পারে। কিন্তু এখানে মনে রাখতে হবে, সেখানে জনসমাগম থেকে মুক্ত থাকতে হবে। সেখানে কিন্তু সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়ে গেছে।
আজ সোমবার (০৪ মে) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রংপুর বিভাগের আটটি জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা ছুটি ঘোষণা দিয়েছি। ৫ মে পর্যন্ত ঘোষণা দিয়েছিলাম, সেটাকে আমরা ১৫ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে চাচ্ছি। কিন্তু সাথে সাথে যেহেতু রমজান মাস, এই রমজান মাসে যাতে কেনাবেচা চলতে পারেৃ দোকানপাট খোলা, যেহেতু রোজার সময় ইফতারি কেনা বা সেহরি খাওয়া বা বাজারঘাট করা- সেগুলো যাতে চলতে পারে, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রেখে আমরা সেগুলো খোলার ও চালু রাখার নির্দেশ দিয়ে দিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি জেলায় যেসব ক্ষুদ্র শিল্পকারখানা রয়েছে সেগুলো চালানো যাবে। অর্থনীতির চাকা যাতে গতিশীল থাকে, সরকার সেভাবেই নির্দেশনা দিয়েছে। সেখানে মানুষকে সুরক্ষিত রেখে, মানুষের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখে সেগুলো যেন পরিচালিত হতে পারে, তার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া- এ ব্যাপারে বেশ কতগুলো নির্দেশনা আপনারা শিগগিরই পাবেন। এটা আমাদের কেবিনেট ডিভিশন থেকে ঘোষণা দেওয়া হবে।
করোনাভাইরাসের শক্তি অনেক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের মতো এক অদৃশ্য শক্তির কাছে ধনসম্পদ, অর্থ কোনো কিছুই কাজে লাগছে না।
চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, শিগগিরই নির্বাচিত ৫ হাজার ৫৪ জন নার্স নিয়োগ দেওয়া হবে। যাদের করোনাভাইরাসের চিকিৎসার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীসহ নিজ দলের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ইতোমধ্যে কয়েকজন পুলিশ মারা গেছেন। তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। অনেকের কবর খুঁড়তেও পুলিশ সহযোগিতা করছে বলে উল্লেখ করেন। এ ছাড়া যারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সবাইকে ধন্যবাদ দেন।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ১০ টাকায় চাল কেনার জন্য আরও ৫০ লাখ রেশন কার্ড সুবিধা দেওয়া হবে। যাদের আয়-উপার্জনের পথ নেই, তাদের ঈদের আগে নগদ অর্থসহায়তা দেওয়া হবে।
সরকারপ্রধান ফের কৃষির ওপর জোর দিয়ে বলেন, এবার ২১ লাখ টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা হবে। আশা করি, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে খাবারের সমস্যা হবে না।
সবাইকে রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মারাত্মক আকারে দেখা দিয়েছে এবং সারাবিশ্বে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছেন। এর মধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিরাও আছেন। সবার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
তিনি বলেন, যারা ধনী দেশ, অগাধ সম্পদ তারাও করোনাভাইরাসের কাছে ব্যর্থ। একটা শক্তিশালী ভাইরাসের কাছে কোনো কিছুই কাজে লাগছে না। ধন-সম্পদ অর্থ কোনো কিছুই কাজে লাগছে না। ধনী-গরিব সবাই একাকার হয়ে যাচ্ছেন। আমাদের দেশের মানুষের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।