বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামি রিসালদার মোসলেম উদ্দিন পরিচয় লুকাতে নাম বদলে ফেলেছেন। ফাঁসির দড়ি থেকে বাঁচতে মোসলেম উদ্দিন পালিয়ে থাকলেও তার সন্তানেরা পিতার নতুন নাম ব্যবহার করে বহাল তবিয়তে বাংলাদেশে চাকরি বা ব্যবসা করছেন।এটিএন নিউজ এর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পিতার নতুন নাম ব্যবহার করে খুনির সন্তানেরাও পেয়েছে জাতীয় পরিচয় পত্র, যদিও ঠিক আছে মায়ের নাম।৭৫ এর ১৫ই আগস্ট ভোরে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসভবনে স্বপরিবারে খুন করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।এই নির্মম হত্যাকান্ডে বিপদগামী সেনা সদস্যদের সঙ্গে ছিলেন মোসলেম উদ্দিন।৭৫ এর ৩ নভেম্বর কারাগারে চার নেতাকে হত্যার নেতৃত্বে দেন মোসলেম উদ্দিন।বঙ্গবন্ধুকে হত্যার দায়ে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামি মোসলেম উদ্দিন।১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পলাতক সে।দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে সর্বোচ্চ আদালত বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ১২ জনের মৃত্যুদন্ড বহাল রাখে।২০১০ সালে কার্যকর হয় ৫ খুনির মৃত্যুদন্ড।রিসালদার মোসলেম উদ্দিন সহ ৭ খুনি পালিয়ে ছিল সম্প্রতি খুনি মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয় ।পরিচয় আড়াল করতে নিজের নাম বদলে রিসালদার মোসলেম উদ্দিন এখন হয়ে গেছেন রফিকুল ইসলাম খান।সঙ্গে তাঁর ৫ ছেলে ও ১ মেয়ে পিতার নাম বদলে নিজেদের লুকাতে চাইছে। পিতার নতুন নাম ব্যবহার করে তার সন্তানেরা জাতীয় পরিচয় পত্র সংগ্রহ করেছে এবং বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছে। মোসলেম উদ্দিনের সন্তানদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা অনুযায়ী নরসিংদী সদর উপজেলার চিরিসপুর ইউনিয়নের তাওয়াদী গ্রামে গেলে গ্রামের বাসিন্দারা জানান রফিকুল ইসলাম খান নামে কাউকে চিনেন না। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোসলেম উদ্দিনের ছেলে সাজেদুল ইসলাম খানের ছবি দেখে চিনতে পারলেন,বিস্মিত হলেন তার বাবার নাম শুনেই। তিনি রফিকুল ইসলাম খান নামে কাউকে চিনেন না, তবে সাজেদুল ইসলাম খানকে শনাক্ত করলেন বঙ্গবন্ধুর খুনির ছেলে হিসাবে।
অনুসন্ধানে জানা যায় পিতার নতুন নাম ব্যবহার করে তার সন্তানেরা বেসরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে। কেউ জড়িত ব্যবসার সাথে। মোসলেম উদ্দিন এর বড় ছেলে সাজেদুল ইসলাম খান জানান তারা ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বহাল তবিয়তেই ছিল ,এরপর সব কিছু বদলে যায়। তবে ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর আবার চাকরি পায় এই পরিবারের কেউ কেউ। বঙ্গবন্ধুর খুনির পরিচয় আড়াল করতে তার বাবা নাম বদলে ফেলেছে তা পরিষ্কার তার সন্তানদের কাছেই। এখন কোথায় আছে মোসলেম উদ্দিন ? প্রশ্নের জবাব নেই তার সন্তানদের কাছেও ।বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার চান মোসলেম উদ্দিনের সন্তানেরাও।রিসালদার মোসলেম উদ্দিনের বাসায় এক সময় পুলিশ পাহারায় থাকতো, তবে বর্তমানে এ অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর খুনি মোসলেম উদ্দিনকে দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসি কার্যকরের দাবি এলাকাবাসীর।