ক্রিকেটে এতদিন বল টেম্পারিং একটি গুরুতর অপরাধ হিসেবেই বিবেচিত হয়ে এসেছে। সাধারণত বিশেষ সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে বলের ক্ষতিসাধনকেই বল টেম্পারিং বা বল বিকৃতি বলে। এতদিন অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হলেও এখন থেকে বল বিকৃতিকে স্বীকৃতি দেয়ার কথা ভাবছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)।
মূলত করোনাভাইরাসের কারণেই এমন পরিবর্তন আসতে চলেছে ক্রিকেটে। এতদিন বলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে মুখের থুতু কিংবা লালা ব্যবহার করতেন বোলাররা। এরপর বলটি ট্রাউজারে ঘষে শুরু করতেন রান আপ। টেস্ট ম্যাচে এই কাজের ফলে বোলার-ফিল্ডারদের ট্রাউজারে লাল দাগ দেখা স্বাভাবিক বিষয়ই ছিল।
তবে বর্তমান সময়ে সকলের চিন্তার অন্যতম কারণ করোনাভাইরাস ছড়ানোর অন্যতম প্রধান মাধ্যম মুখ ও মুখের লালা। ফলে বলে এই পুরনো পদ্ধতি ব্যবহার করলে করোনা ছড়ানোর শংকা থেকে যায়। তাই এই বিষয়টি বাতিলের চিন্তা করছে আইসিসি। তবে এই সুবিধা বাতিল করলে ফিল্ডিং দল বলের উজ্জ্বলতা কিভাবে ধরে রাখবে, এই সমস্যার সমাধানেই বল বিকৃতিকে বৈধতা দেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো জানিয়েছে, বল টেম্পারিংয়ের ব্যাপারটি বৈধতার বিষয়টি পর্যালোচনা করছে আইসিসি ক্রিকেট কমিটি এবং এমসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটি। মে মাসের শেষ দিকে বা জুনের প্রথম দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দুই পক্ষ আলোচনায় বসতে পারে। সেখানেই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
তবে বিকৃতির নামে অতিরিক্ত ক্ষতিসাধনকে সমর্থন করবে না আইসিসি। বর্তমানে বল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এসজি, ডিউক ও কোকাবুরার সঙ্গে বলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখার উপায়ের ব্যাপারে কথা চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বলে মোম, চামড়ায় ব্যবহার করা লিকুইড বা জুতা পালিশ করার লিকুইড ব্যবহার করা যাবে কিনা এসব নিয়ে ভাবনা চিন্তা ও আলোচনা চলমান রয়েছে। এসব করতে গিয়ে বলের কৌণিক আকৃতিতে পরিবর্তন আসা যাবে না, এই শর্তেই বিষয়গুলো পর্যালোচনা করছে আইসিসি।
শেষ পর্যন্ত বল টেম্পারিং বৈধতা পেলেও তাই এই কাজের ওপর যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ রাখা হবে বলে জানিয়েছে ক্রিকইনফো। মাঠে দায়িত্বরত আম্পায়ারের সামনেই কৃত্রিমভাবে বলের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর কাজ করা যাবে। অর্থাৎ এই কাজের তদারকিতে আম্পায়ারই মূল ভূমিকা পালন করবেন বলে জানানো হয়।
তবে খুব সহজে বলে থুতু বা লালা দিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়ানোর অভ্যাস পরিবর্তন করা সহজ হবে না বলে মনে করছেন দুই অজি পেসার প্যাট কামিন্স ও জশ হ্যাজেলউড। তাদের মতে, ফাস্ট বোলারদের ক্ষেত্রে এমন অভ্যাস বাতিল করা খুবই কঠিন।