প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস এখন মহামারীতে রূপ নিয়েছে। বাংলাদেশেও সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে দ্রুত কিন্তু প্রতিকার নেই। নিম্ন আয়ের মানূষেরা বেকার হয়ে এখন দিশেহারা। খাদ্যাভাবে মানূষ রাস্তায় নেমে আসবে শীঘ্রই। সরকারী সাহায্য যারা পাচ্ছে তাদের ছাড়াও গৃহে বন্দি মানূষ বাড়ী ভাড়া যোগাড় করতে পারছেনা অনেকে। লজ্জায় হাত পাততে পারছেনা সাহায্যের। উচিত হবে এমন পরিবারের জন্য কোন উপায় বের করা কারন মরণব্যাধি করোনা দীর্ঘস্থায়ী ও হতে পারে। ইতিমধ্যেই উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে, জীবন রক্ষায় মানূষ বন্দি হয়ে পরেছে ঘরে। শুধু সরকারী সাহায্যই যথেষ্ট হবেনা, বিত্তবানদের ও উচিত এগিয়ে আসার। যারা রিলিফের চাল চুরি করছে তারা ছিচকে চোর, যারা হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করে দিব্যি রয়েছে তাদের খোজ করা দরকার। জনগন ক্ষেপে গিয়ে ধাওয়া করলে রেহাই পাবেনা কেউ। এমনটি যে হবেনা বলা যায়না। বাঙ্গালীরা সব পারে। পেটের ক্ষুধা ভয়ংকর। বাংলাদেশের মানূষ জানে কারা পয়সাওয়ালা, তাদের অবৈধ ধন-সম্পদের উৎসটিও অজানা নয় কারও। ব্যংকের টাকা লুট করে যারা পাচার করেছে, তারা উদ্যোগ নিলে সরকারের সমপরিমান অর্থ বেড়িয়ে আসতে পারে সাহায্যের জন্য।
সুখের বিষয় হলো, শস্যের ফলন ভাল হয়েছে এবার। খাদ্য অধিদপ্তর সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রন করতে পারলে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের তুলনায় ভাল থাকবে আশা করা যায়। দেশের আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা সহ সেবা কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। গুটি কয়েক ছাড়া ডাক্তাররাও পরিশ্রম করছেন রাত দিন। কিন্তু উল্লেখ্যোগ্যভাবে জননেতারা নেই। জনগনের ভোটে নির্বাচিত নেতাদের দেশপ্রেম প্রমান করার এটাইত ছিল মোক্ষম সুযোগ। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী ছাড়া বেশিরভাগ নেতাদেরই চেহারা দেখা যায়না টেলিভিশনে। ডাক্তাররা চিকিৎসা দিতে গিয়ে প্রান দিচ্ছে, নেতারা এলাকা পাহাড়া দিলে রিলিফের চাল চুরি বন্ধ করা যেত। নির্বাচন এলে যারা জনগনের দুয়ারে গিয়ে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ভোট কিনেন তারা এই দুর্যোগে আত্নগোপনে কেন! লোকদেখানো হলেও তো এগিয়ে আসতে পারতেন! কেউ কেউ যে আসেননি তা নয়, বেচে থাকলে এর সব কিছুরই চিলচুড়া হিসাব বুঝে নিবে জনগন।
আর যারা এই দুর্যোগেও কৌশলে রাজনীতি করছেন তারা নীজেদের যোগ্যতা প্রমান করুন। সমালোচনা করা সহজ, কাজ করে প্রমান করুন যা আপনি বিশ্বাস করেন।
দেশে এখন ঐক্য প্রয়োজন। দেশের মানুষ বাঁচাতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। মরনের ভয় এখন সকলেরই, রাজা বাদশাহরাও আক্রান্ত হয়েছেন মরণব্যাধি করোনায়। চিকিৎসা নেই কোথায়ও। জীবন বাঁচাতে পথ একটাই ঘরে থাকা, দুরত্বে থাকা আর নিরাপদে থাকা। এই নিয়ম পালন করা সহজ নয়, আর্থিক সংগতিও নেই সবার। একই অবস্থা উন্নত দেশেও এখন। জীবন রক্ষায়, দেশ রক্ষায়, মানবতা রক্ষায় আসুন সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করি করোনা ভাইরাসের। সভ্যতা, মানবতা আর সৌহার্দ প্রমানের এটাই সুযোগ। কে জানে পরবর্তী রোগীটি হয়তো আমি কিংবা আপনি!
আজিজুর রহমান প্রিন্স
রাজনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক
টরেন্টো, কানাডা
১৬ এপ্রিল ২০২০