দেশনেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে সব কিছু এখন বন্ধ। অনেক মানুষের কষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে দিনমজুর, কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষ, ছোটোখাটো ব্যবসায়ী- এমনকি যারা নিম্নবিত্ত তাদেরও কষ্ট হচ্ছে। এমনকি যারা হাত পেতে খেতে পারবেন না, তাদের জন্য ১০ টাকা কেজিতে চাল বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এখন আমাদের ৫০ লাখ মানুষের জন্য রেশন করা আছে, যারা ১০ টাকায় চাল পান। আমরা আরও ৫০ লাখ মানুষকে রেশন কার্ড দেব, তবে এমনি দিতে গেলে অনেক সময় সমস্যা হয়ে যায়। আমরা তালিকা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ঢাকা বিভাগের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
গণভবন থেকে সকাল ১০টায় কনফারেন্স শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার সরাসরি সম্প্রচার করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নিয়েছিলাম, কিন্তু করোনা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার কারণে কিছুটা ধাক্কা আমাদের দেশে আসে আসে। এজন্য আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন এবং ২৬ মার্চের অনুষ্ঠান বাতিল করি। জনসমাগম বাদ দিতে এসব করেছি আমরা।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলাসহ বেশ কয়েকটি জেলায সব থেকে বেশি আক্রান্ত। অন্যান্য জেলায়ও কিছু আছে কিন্তু ঢাকা এবং এর আশপাশে ভাইরাস কেন এত বেশি হলো। এটি নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করতে চাই। এ রোগে এ পর্যন্ত যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি আমি। যারা এখন চিকিৎসারত আছেন তারাও দ্রুত আরোগ্য লাভ করুক, এটাই আমি চাই।
তিনি বলেন, যেহেতু সবকিছু এখন বন্ধ। অনেক মানুষের কষ্ট হচ্ছে। যারা দিনমজুর কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ, ছোট ব্যবসায়ী, এমনকি নিম্নবিত্তদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমরা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। সবাইকে সহযোগিতা করব। এমনকি এটা আমরা শুরু করেছি। মানুষের কাছে হাত পাততে পারে না যারা, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা আরও ৫০ লাখ মানুষকে রেশন কার্ড করে দেব। ১০ টাকার ওএমএস চাল নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় এটা স্থগিত করি।
সরকারপ্রধান বলেন,আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশ, কোস্টগার্ড যে যেখানে আছে প্রত্যেকে কিন্তু অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই করোনাভাইরাস এমন একটা জিনিস সারাবিশ্বে এ ধরনের ঘটনা আর কখনও দেখা যায়নি। সারাবিশ্বে ২৫০ কোটি মানুষ ঘরবন্দি। এটি একটি অদৃশ্য শক্তি, যা চোখে দেখা যায় না। এর প্রভাবে সারা বিশ্ব একটা জায়গায় চলে এসেছে। সারা বিশ্বের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা হবে। এভাবে চিন্তা করে আমরা ইতোমধ্যেই ৯২ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ তৈরি করেছি।