করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমিক, মজুর, হকার ও রিকশাচালক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (১৩ এপ্রিল) বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন।
করোনাভাইরাসের কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সুরক্ষায় সরকার নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, স্বল্প-আয়ের মানুষদের বিনামূল্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করার জন্য ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল এবং ১ লাখ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মোট মূল্য ২ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা।
শহরাঞ্চলে বসবাসরত নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য ওএমএস-এর আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে চাউল বিক্রয় কার্যক্রম চালু করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী তিন মাসে ৭৪ হাজার মেট্রিক টন চাল এই কার্যক্রমের আওতায় বিতরণ করা হবে। এ জন্য ২৫১ কোটি টাকা ভর্তুকি প্রদান করতে হবে।
গৃহহীন মানুষদের জন্য বরাদ্দের ঘোষণা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত অন্যতম কার্যক্রম গৃহহীন মানুষদের জন্য গৃহ নির্মাণ কর্মসূচি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। এ বাবদ সর্বমোট ২ হাজার ১৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। কেউ গৃহহীন থাকবেন না।
তিনি আরো বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারী থেকে আমাদের বাঁচতে হবে। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। যখন যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা নেওয়া হচ্ছে। এ মুহূর্তে আমাদের কোন খাদ্য সঙ্কট নেই। সরকারি গুদামে যেমন পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার মজুত রয়েছে, তেমনি রয়েছে গৃহস্থদের ঘরে ঘরে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, অনেক সদাশয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানও দরিদ্র জনগণের সহায়তায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণে এগিয়ে এসেছেন। তবে, এসব ত্রাণসামগ্রী ও সহায়তা বিচ্ছিন্নভাবে না বিলিয়ে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে শৃঙ্খলার সঙ্গে বিতরণ করা প্রয়োজন। তা না হলে ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকে যাবে। আমি বিত্তবানদের এই সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি।
ভাষণের শুরুতে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দের শুভেচ্ছা। দেশে-বিদেশে যে যেখানেই আছেন, সবাইকে জানাই বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা।
দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) মহামারী মোকাবেলায় এই উৎসবের সময় সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এবার সবাইকে অনুরোধ করব, কাঁচা আম, জাম, পেয়ারা, তরমুজসহ নানা মওসুমী ফল সংগ্রহ করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাড়িতে বসেই নববর্ষের আনন্দ উপভোগ করুন। আপনারা বিনা কারণে ঘরের বাইরে যাবেন না। অযথা কোথাও ভিড় করবেন না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করুন, পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করুন।