বৈশ্বিক করোনা মহামারি ঠেকাতে ভ্যাকসিনের পেছনে ছুটছেন গবেষকেরা। এর মধ্যেই দারুণ এক আশার কথা শোনালেন যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। তাঁরা দাবি করছেন, করোনভাইরাসের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের খোঁজ তাঁরা পেয়ে গেছেন বলে মনে করছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, গতকাল বৃহস্পতিবার গবেষকেরা তাঁদের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেন। তাঁরা মনে করছেন, খুব দ্রুত ভ্যাকসিন উৎপাদন করা যাবে, যা উল্লেখযোগ্যভাবে রোগের বিস্তারকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হবে। গবেষণাসংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে ‘ইবোয়ামেডিসিন’ সাময়িকীতে।
রয়টার্স জানিয়েছে, গবেষকদের তৈরি ভ্যাকসিন ছোট্ট আঙুলের মাথায় বসানো যায়—এমন প্যাচের শরীরে সরবরাহ করা যাবে। ভ্যাকসিনটি ইঁদুরের দেহে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। এ সময় এটি যথেষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে, যা ভাইরাসকে রুখে দিতে সক্ষম।
গবেষক গ্যাম্বোত্তো বলেছেন, ‘আমরা জানি, নতুন ভাইরাসটির সঙ্গে কোথায় লড়াই করতে হবে।’
ভ্যাকসিনটি অন্যান্য সাধারণ ফ্লু ভ্যাকসিনের মতোই প্রচলিত পদ্ধতি অনুসরণ করে ল্যাবনির্মিত ভাইরাল প্রোটিনের টুকরো থেকে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে।
গবেষকেরা বলেন, ইঁদুরের ওপর পরীক্ষাকালে খুব বেশি দিন পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। তবে দুই সপ্তাহের মধ্যেই এটি ইঁদুরের শরীরে যথেষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে। তাঁরা এখন যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাছে নতুন ওষুধ পরীক্ষা করার জন্য অনুমতি চাইবেন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই পরীক্ষাগারে মানুষের ওপর এটি পরীক্ষা করতে পারবেন বলে আশা করছেন তাঁরা।
গবেষকেরা বলেন, তাঁর ভ্যাকসিন প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রচলিত ইনজেকশনের পরিবর্তে ত্বকে স্পাইক প্রোটিন যুক্ত করতে প্যাচ ব্যবহার করছেন, যা শক্তিশালী প্রতিরোধের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। ওই প্যাচের মধ্যে ৪০০ ক্ষুদ্র ‘মাইক্রোনিডল’ বা সুচ যুক্ত থাকে, যা চিনি ও প্রোটিনের অংশ দিয়ে তৈরি। এটা অনেকটাই ব্যান্ড-এইডের মতো ব্যবহার করা হয়, যাতে সুই স্ক্রিনের মধ্যে মিশে যায়।
গবেষকেরা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, ভ্যাকসিনটি ব্যাপকভাবে ব্যবহারের জন্য অত্যন্ত পরিমাপযোগ্য সমাধান হবে।
গ্যাম্বোত্তো বলেন, অনেক ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে শুরুতেই এটি পরিমাপযোগ্য কি না, তা ঠিক করার প্রয়োজন হয় না। তবে মহামারির সময় দ্রুত ভ্যাকসিন তৈরির প্রয়োজনে এটাই প্রথম প্রয়োজনীয়তা।