কক্সবাজারে করোনাভাইরাস আক্রান্ত নারী চট্টগ্রাম শহরে অবস্থান করেছেন এমন দুটি বাড়ি লকডাউনকরেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি মিয়া।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত নারীর অবস্থানের বিষয়টি জানার পর আমরা তার দুই ছেলের বাড়ি লকডাউন করেছি। তবে কৌশলগত কারণে বাড়ি দুটির অবস্থান জানানো যাচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জাগো নিউজকে জানান, কক্সবাজার জেলার চকরিয়ার ৭৫ বছর বয়সী এক নারী ওমরাহ থেকে দেশে ফেরেন ১৩ মার্চ। এরপর তিনি নগরের বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার সংলগ্ন চান্দগাঁও আবাসিকে ছেলের বাসায় উঠেন। এ সময় করোনা আক্রান্ত ওই নারী ও তার ছেলে বাসায় অবস্থান করেন। এছাড়া তার আরেক ছেলের বাড়ি নগরের কালামিয়া বাজার এলাকায় হলেও সেখানে তিনি যাননি। তবে প্রশাসন দুটি বাড়িই লকডাউন করেছে।
তিনি আরও জানান, পরদিন ১৪ মার্চ খুটাখালীর নিজ বাড়ি যান ওই নারী । কিন্তু ১৭ মার্চ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কক্সবাজার শহরে নেয়া হয়। ওইদিন তিনি শহরের টেকপাড়ায় বড় ছেলে বাসায় ওঠেন এবং জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ওই রোগীকে ১৮ মার্চ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার অসুস্থতা দেখে নমুনা পরীক্ষার জন্য ২২ মার্চ পাঠান রাজধানীর রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর)। মঙ্গলবার ওই নারীর করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়।
সূত্র জানায়, করোনা আক্রান্ত নারীর সাত ছেলেমেয়ে। তিনি অসুস্থ হওয়ার পর একজন ছাড়া সব ছেলেমেয়েই তার সংস্পর্শে এসেছিলেন। এ কারণে এলাকাবাসীর আশঙ্কা করোনা আক্রান্ত নারীর গমনস্থল ও তার সংস্পর্শে আসা মানুষরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন, যা অনিরাপদ করে তুলছে চট্টগ্রাম শহরকে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মহিউদ্দিন জানান, গত ১৮ মার্চ ওই নারী সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর যেসব ডাক্তার-নার্স তাকে চিকিৎসা দিয়েছেন, তাদের সবাইকে কোয়েরেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। ডা. মহিউদ্দিন নিজেও কোয়েরেন্টাইনে রয়েছেন বলে জানান। ওই নারীর সংস্পর্শে আসা সবাইকে কোয়েরেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনাভাইরাসে আরও ছয়জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। ফলে দেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চারজনে। আর আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৯ জনে।