সীমান্ত আইনের কোন রকম তোয়াক্কা না করে বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমানায় হুটহাট করে ঢুকে পড়ে জেলে ও রাখালদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী বিএসএফ। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষেরা।
গত ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশের ভেতরে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে রাজশাহীর পবা উপজেলার গহমাবোনায় পদ্মায় মাছ ধরার সময় পাঁচ জেলেকে ধরে নিয়ে যায় বিএসএফ সদস্যরা। সেসময় বিজিবি সদস্যরা বাধা দিলে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী দাবি করে, এটি বাংলাদেশের নয়, ভারতীয় ভূ-খণ্ডের ভেতরে। সম্প্রতি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বিজিবি সদস্যরা মুঠোফোনে ধারণকৃত একটি ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হন শূন্য রেখা থেকে সেই স্থানটি প্রায় দেড় কিলোমিটার বাংলাদেশের ভেতরে অবস্থিত।
সীমান্ত আইনের কোন তোয়াক্কা না করে গেল ছয় মাসে বাংলাদেশের সীমানায় হুটহাট করে ঢুকে পড়ে অন্তত ১৫ জন রাখাল ও জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ। পরে একাধিকবার পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও তাদের ফেরত না দিয়ে তুলে দেয়া হয় ভারতীয় পুলিশের কাছে। এতে আতঙ্কিত সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষেরা।
স্থানীয় এক নারী বলেন, আমার ছেলে ও মেয়ের জামাইকে ধরে নিয়ে গেছে। আমাদের ছেলেদের ফেরত চাই।
বিএসএফ সদস্যদের এমন নিয়ম ভাঙার প্রবণতা সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টির পাশাপাশি দু-দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ভূ-রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন মিশ্র।
এদিকে নিজেদের ভূ-খণ্ড রক্ষা ও সীমান্ত এলাকার মানুষের নিরাপত্তা বাড়াতে দুই বাহিনীর মধ্যে আলোচনা চলছে বলে জানান, বিজিবি’র দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা।
বিজিবি-১ ব্যাটেলিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আমাদের হিসেবে কিন্তু ওরা দেড় থেকে দুই কিলোমিটার ভিতরে চলে এসেছে। এ বিষয়ে আমরাও আমাদের প্রমাণ উপস্থাপন করবো। এবং বিজিবি সদস্যরাও ক্যাম্প থেকে এসে আমাদের ইঞ্জিনচালিত বোটে গিয়ে আমাদের অবস্থান নিশ্চিত করতেছি।
গেল বছরের ১৭ অক্টোবর রাজশাহীর চারঘাটে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে বিএসএফ সদস্যরা আটক ভারতীয় জেলেকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে বিজিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে।