এমন একটা সময় ছিলো যে প্লেনে চড়লেই মোবাইল ফোনটাকে বন্ধ করে রাখতে হতো। আর এই ফোন খোলা বা বন্ধ করা নিয়ে প্লেনের কর্মীদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছেন অনেক খ্যাতনামা ব্যক্তিই। যাদের এই তর্কের জেরে প্লেন থেকে নামিয়ে পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। ফোন বন্ধ রাখার পরিবর্তে প্লেনে ‘ফ্লাইট মোড’ বা ‘এরোপ্লেন মোড’ চালু রাখার বিষয়টি খুব বেশিদিন হয়নি সামনে এসেছে। মূলত নিরাপত্তার খাতিরেই ফোন বন্ধ খোলা বা ফ্লাইটমোড বিষয়টি নিয়ে এতটা কড়াকড়ি থাকে। তবে প্লেনে ফোন এরোপ্লেন মোডে না রাখলে সত্যি কি হয় এটা জানার আগ্রহ হয়তো অনেকেরই আছে। আজকের আর্টিকেলটিতে সেটাই জানানোর চেষ্টা থাকবে।
যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের উদ্ভাবন মোবাইল ফোন আবিষ্কারের চেয়ে অনেক পুরনো। সেই থেকে বিমান প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু এখনো প্লেনের কিছু মডেল ব্যবহৃত হচ্ছে যেগুলোর বয়স অত্যাধুনিক স্মার্ট ডিভাইসের উদ্ভাবনকালের চেয়ে বেশি।
তাই এই নতুন প্রযুক্তিগুলো ফ্লাইট চালনার ক্ষেত্রে কোনো বাধা জটিলতার সৃষ্টি করে কিনা সেটি পরীক্ষা করার প্রয়োজন ছিল। আর দীর্ঘদিন ধরে একে একে মোটামুটি সবগুলো আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন কোম্পানির ব্যবহৃত প্রযুক্তিকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে যাচাই করে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হয়েছেন, উড়োজাহাজে ফোন ব্যবহার ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিপজ্জনক নয়
তবে কিছুদিন আগেও কিন্তু বিষয়টি এমন ছিল না। ২০১১ সালেও বোয়িং ৭৩৭ জাতীয় কিছু উড়োজাহাজে ব্যবহৃত বিশেষ কিছু মডেলের ফ্লাইট ডেকের স্ক্রিনে জটিলতা দেখা দিয়েছিল ফ্লাইটে মোবাইল ফোন চালু থাকার কারণে। তাই মোবাইল ডিভাইস ব্যবহারের কারণে উড়োজাহাজ চালনা প্রক্রিয়ায় যেন কোনো ত্রুটি দেখা না দেয় সেজন্যই কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে এত কড়া আচরণ করেন।
তবে কড়াকড়ি করেও সবসময় লাভ হচ্ছিল না। কেননা ফ্লাইট নিরাপত্তা নির্ধারক, এয়ারলাইন কোম্পানি, উড়োজাহাজ নির্মাতাসহ উড়োজাহাজ শিল্প সংশ্লিষ্ট সবগুলো পক্ষই জানে, প্রত্যেকটি ফ্লাইটেই অন্তত কয়েক ডজন মোবাইল ডিভাইস চালু করা থাকে এরোপ্লেন মোড ছাড়াই।
কিন্তু বিমানযাত্রায় ‘অধিকাংশ’ বিষয়টি কখনোই নিরাপদ হতে পারে না। কেননা যতই নিষেধ করা হোক, কেউ হয়তো নিজের অজান্তেই তার স্মার্টফোনটির ফ্লাইট মোড চালু করতে ভুলে গেছেন। কেউ একজন হয়তো জানেনই না তার স্মার্টওয়াচ, হেডফোন বা অন্য একটি ডিভাইসের এরোপ্লেন মোড আছে যেটি চালু করা দরকার। অনেকে আবার বিষয়টিকে পাত্তাই দেন না।
তাই নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে এ নিয়ে বিপুল পরিমাণ গবেষণা চালানো হয়েছে, এবং অবশেষে এয়ারলাইন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, উড়োজাহাজে থাকা অবস্থায় আপনার মোবাইল ফোনের ফ্লাইট মোড যে চালু রাখতেই হবে এমন কোনো কথা নেই।