মাত্র কয়েক ঘণ্টার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিকে কাজে লাগিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা। বৃষ্টির কারণে চাষিরা ক্ষেতের পেঁয়াজ তুলতে না পারায় বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই ঢাকায় প্রতিমণ তিন হাজার টাকার দেশীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয় ছয় হাজার টাকায়। এ খবরে সারা দেশের ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রামমুখী হলে সুযোগটা লুফে নেন খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। শনিবার (০৪ জানুয়ারি) একদিনেই সরবরাহের অজুহাতে সিন্ডিকেট করে কেজিতে বাড়িয়ে দেয়া হয় ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় মণপ্রতি তিন হাজার টাকার দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ দ্বিগুণ বেড়ে বিক্রি হয় ছয় হাজার টাকায়। হঠাৎ মণে তিন হাজার টাকার এমন দাম বৃদ্ধিতে সংকট তৈরি হয় বাজারে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রামমুখী হলে শনিবার খাতুনগঞ্জে বেড়ে যায় সব ধরণের পেঁয়াজ কেজিতে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। সিন্ডিকেট করে রোববারে বাড়ি দেয় আরো ১০ টাকা।
এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘কয়েকদিন আগে বৃষ্টি হলো এর জন্য কৃষক পেঁয়াজ উঠাতে পারিনি। তাই বাজারে দেশি পেঁয়াজের সংকট পড়ায় চট্টগাম থেকে পেয়াজ নিয়ে গেছে। তাই চট্টগ্রামের বাজারে এখন পেঁয়াজ সংকট।’
সিন্ডিকেটের কথা অস্বীকার করে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘জানুয়ারির শুরুতে দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসার কথা থাকলেও পর্যাপ্ত আসেনি। সরবরাহ কম থাকায় অস্থিরতা সৃষ্টি হয় বাজারে।’
খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বলেন, ‘সবার কাছে একটা ধারণা ছিল জানুয়ারির ১৫ তারিখের মধ্যে হয়তো ইন্ডিয়া আমাদের পেঁয়াজ দেবে। সে সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে না তারা জানুয়ারিতে মাল দেবে। যে কারণে আমদানি করা এলসি অনেকেই বাতিল করে দিয়েছে।’
হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি সহ-সভাপতি মো. আবছার উদ্দীন বলেন, ‘কৃষকরা মনে করছে তারা আস্তে আস্তে তুলবে পয়সাগুলো পাবে।’
বেশি দামের আশায় প্রান্তিক কৃষকরা অপরিপক্ক আগাম পাতা পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন। আবার এখন বেশি লাভের আশায় পেঁয়াজ বাজারে তুলছেন না বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
খাতুগঞ্জ ট্রেড এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশনের সদস্য মোহাম্মদ মিন্টু সওদাগর বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম যেন না বাড়ে এজন্য সরকারের নজরদারিতে রাখা উচিত। কারণ আমাদের পেঁয়াজ ফেব্রুয়ারিতেই শেষ হয়ে যাবে।’
দেশে বছরে ২৮ থেকে ৩০ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। যার ১৮ থেকে ২০ লাখ মেট্রিক টন আসে দেশীয় উৎপাদন থেকে।