অবশেষে সুদ হার নেমে আসছে এক অংকের (সিঙ্গেল ডিজিটে) ঘরে। তবে সব খাতে নয় শুধু শিল্প ঋণে সুদ হার কমছে। আগামী জানুয়ারি থেকে উৎপাদনশীল খাতে তথা শিল্প ঋণে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশের বেশি সুদ নিতে পারবে না ব্যাংকগুলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পর্ষদ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ব্যাংটির মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, শিল্প ঋণে এক অংকের সুদহার বিষয়ক এজেন্ডা সমর্থন করেছে বোর্ড। শিগগিরই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। গ্রাহক আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ সুবিধা পাবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে বোর্ড সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকটির পরিচালক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম, অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক আফতাব উল ইসলাম প্রমুখ।
সভা সূত্রে জানা গেছে, লাভজনক শিল্পে এই সুদ হারে ঋণ বিতরণ করা হবে। অর্থাৎ যেসব শিল্পে বিনিয়োগ হলে অর্থনীতিতে সরাসরি ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, কেবল সে ক্ষেত্রেই বিশেষ শিল্প ঋণ হিসেবে সুদহার এক অংকে হবে।
বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীও বেশ কয়েকবার নির্দেশনা দিয়েছেন। সাবেক ও বর্তমান অর্থমন্ত্রী বারবার নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকার সুদহার কমানোর শর্তে ব্যাংকগুলোকে ৫ ধরনের বিশেষ ছাড়ও দিয়েছে। কিন্তু এসব সুবিধা নিয়েও তারা সুদহার না কমিয়ে উল্টো বাড়িয়েছে অনেক ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, রাষ্ট্রায়ত্ত ও বিশেষায়িত ৮ ব্যাংক ছাড়া বেসরকারি প্রায় সব ব্যাংকই কোনো না কোনোভাবে সিঙ্গেল ডিজিটের নির্দেশনা অমান্য করছে।
সুদ হার কমাতে চলতি বছরে ১ ডিসেম্বর ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডিদের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এতে ‘নয়-ছয়’ সুদহার বাতিল করে নির্দিষ্ট খাতের ঋণে সর্বোচ্চ (সীমা) ৯ শতাংশ সুদ হার বেঁধে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে এটি বাস্তবায়নে কয়েকটি দাবি করেন ব্যাংকের মালিকেরা।
ওই বৈঠকে অর্থমন্ত্রী বলেন, জানুয়ারি থেকে সিঙ্গেল ডিজিট কার্যকর হবে। কীভাবে কার্যকর হবে তা নির্ধারণ করার জন্য একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন তিনি। ওই ঘোষণার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামানকে প্রধান করে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
ওই কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার বিষয়ে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটি বাস্তবায়নের ওপরও জোর দেয়া হয়। পাশাপাশি শিল্প ঋণে ৯ শতাংশ সুদ কার্যকর বিষয়ে সুপারিশ করা হয়। আর আমানতের বিষয়ে বলা হয়েছে, এই সুদহার নির্ধারণ করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।