হুমায়ুন কবির, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় হঠাৎ গত দু’দিন ধরে প্রচন্ড শীতের প্রকোপ বেড়েছে। ২০ ডিসেম্বর শুক্রবার সকাল থেকে কোথাও সূর্যের দেখা পাওয়া যায়নি। সমস্ত উপজেলা কুয়াশার চাদরে ঢেঁকে গেছে। চলতি মৌসুমে দেশের সর্ব উত্তরের রাণীশংকৈলে শৈত্য প্রবাহের দাপট দিন দিন বেড়েই চলেছে, সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীত ও ঘন কুয়াশা। গত কয়েকদিন ধরে মৃদু থেকে শীতল বাতাসের প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। এরমধ্যে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে চারদিক। তীব্র এ শৈত্যপ্রবাহের কারণে উপজেলার জন-জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শীত নিবারণের জন্য পাড়া মহল্লা সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় খড় কুটোতে আগুন জ্বালিয়ে বসেছে সাধারণ মানুষ।
আজ ৬ টায় উপজেলার সসর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অপরদিকে কয়েক ঘণ্টায় কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা অনেকটাই উঠানামা করছে এবং সামনে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এদিকে শীতের প্রকোপে ও হিম শীতল হাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে উপজেলার সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সকাল থেকে দুুুুপুর ও শেষ বিকেল থেকে ঘনকুয়াশা শুরু হয়ে রাত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তা বৃষ্টি আকারে তা নেমে আসছে মাটিতে। সন্ধ্যা নামতে না নামতেই শুরু হওয়া ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিমালয় থেকে বয়ে আসা হিমেল বাতাসে নাকাল হয়ে পড়েছে উপজেলার জনজীবন। ঘনকুয়াশার কারণে দিনমজুর, শ্রমজীবী, রিকশা-ভ্যান চালকরা বাইরে যেতে না পারায় দুর্ভোগে পড়েছেন। সব থেকে বেশি শৈত্যপ্রবাহ বইতে দেখা গেছে উপজেলার নদী অঞ্চলের গ্রামগুলোতে। আর এ মৌসুমে শীতের কাপড়ের অভাবে দুর্ভোগে দিন পার করছেন দরিদ্র শীতার্ত অনেক মানুষ। হিমালয় থেকে বয়ে আসা হিমেল হাওয়া আর শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে রাণীশংকৈল পৌর শহরসহ নেকমরদ মেলায় ক্রেতাদের ভিড় করতে দেখা গেছে শীতের কাপড়ের দোকানগুলোতে। অপরদিকে শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড় কিনতে শীতের পুরোনো কাপড়ের দোকানগুলোতে প্রচুর ভিড় করছেন সাধারণ ক্রেতারা। সঙ্গে প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে ৯ টার মধ্যেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে গ্রাম-গঞ্জের হাট বাজারগুলো। হিমালয় থেকে বয়ে আসা হিমলে হাওয়ায় শুধু মানুষই না সঙ্গে জড়ো-সড়ো হয়ে গেছে গবাদী পশু ও বৃদ্ধরা। অনেকেই শীতবস্ত্রের সন্ধানে ছুটছেন উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়সহ বিভিনś দপ্তর ও চেয়ারম্যানের কাছে। রানীশংকৈল সদর উপজেলার লুৎফা বানু নামে একজন জানান, ‘আমরা দিন কামিয়ে দিন খাই’ আর এই ঠান্ডার কারণে আমরা কাজে যেতে পারছি না। ইদ্রিশ আলী নামে একজন বৃদ্ধ জানান, রাতের বেলা খুব বেশি ঠান্ডা লাগে। ঠান্ডার কারণে ঘুমাতে পারি না। সরকারি ভাবে যদি একটা কম্বলের ব্যবস্থা করে দিত তবে একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারতাম। আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় এ মাসের শেষের দিক আরো শীত বাড়তে পারে। এব্যাপারে উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোতাহার হোসেন বলেন ১ম দফায় উপজেলা প্রশাসনের বরাদ্দকৃত প্রায় ৩ হাজার শীতের কম্বল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। ২য় ধাপে আরো কম্বল বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
হুমায়ুন কবির
রানীশংকৈল, ঠাকুরগাঁও
০১৭১০০১৯৩১১