প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিল বলেই মোশতাক তাকে সেনাপ্রধান করেছিলেন।
মোশতাক জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান করল, কারণ মোশতাকের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ছিল জিয়া, তাহলে ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়া যদি জড়িত না থাকবে বা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত না থাকবে বা তার শক্তিতেই তারা যদি এ ঘটনা না ঘটাবে তাহলে মোশতাক কেন জিয়াকে সেনাপ্রধান বানাবে। এটাও তো বড় কথা। বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে পাকিস্তানের একটা প্রদেশ হিসেবে গড়ে তোলাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। আর যে কারণে আমাদের যারা জ্ঞানী গুণী বুদ্ধিজীবী সমাজের যারা মাথা তাদেরকে হত্যা করে নিশ্চিহ্ন করে এ সমাজটাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। আর ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা আর মিথ্যা একটা ইতিহাস তৈরি করা, মানুষকে বিভ্রান্ত করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। কিন্তু সত্যকে কেউ কখনো একেবারে মুছে ফেলতে পারে না, আজকে সেটা প্রমাণ হয়েছে সারা বিশ্বে। আজকে প্রমাণ হয়েছে বাংলাদেশের জনগণের কাছে। আজকের প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জানার সুযোগ পেয়েছে।
বুদ্ধিজীবীদের নাম কেউ মুছে ফেলতে পারেনি, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। ভবিষ্যতে যেকোনো ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে নতুন প্রজন্মকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, আজ যেসব বুদ্ধিজীবী জীবন দিয়ে গিয়েছেন এদেশের জন্য, যাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে তাদের নামটাও মুছে ফেলা হয়েছে। যে স্বাধীন দেশ জাতির পিতা দিয়ে গিয়েছেন সেই স্বাধীনতাকে সমন্নত রেখে, বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে অর্থনৈতিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে সেভাবেই এগিয়ে যাবে। বিশ্বে বাংলাদেশের সবাই যেন মর্যাদা নিয়ে চলতে পারে তাহলে লাখো শহীদের আত্মত্যাগ ও তাদের যে মহান অবদান সেটা শিরধার্য হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, এ দেশে মোশতাক, জিয়ার মতো মীর জাফররা আর যেন কোনো দিন ক্ষমতায় না আসতে পারে এবং দেশের উন্নয়ন যেন বাধাগ্রস্ত না করতে পারে সেদিকে সবার দৃষ্টি দিতে হবে।
জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা এ দেশের স্বাধীনতা চায়নি, স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, হত্যা, খুন, সন্ত্রাস আর লুটপাট করেছে তাদের রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছেন জিয়া। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিরা পালিয়েছিল তাদের ধরে এনে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়া আরও এক ধাপ এগিয়ে যুদ্ধাপরাধী ও বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের মন্ত্রী বানিয়েছেন। তাদের গাড়িতে লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত পতাকা লাগিয়ে দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালিরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় জামায়াতসহ ধর্মান্ধ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। তারা আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনী গঠন করে পাক বাহিনীকে সহায়তার পাশাপাশি হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুট করে।
তিনি বলেন, বাঙালি জাতির বিজয়ের প্রাক্কালে তারা দেশের শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, প্রকৌশলীসহ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ওপর কালো মেঘের ছায়া ছিল সে মেঘ কেটে গেছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল।
সভার শুরুতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।সুত্র : সময় নিউজ