কানাডায় প্রথম দফায় ভোট শেষে ফলাফলে এগিয়ে আছে জাস্টিন ট্রুডোর ক্ষমতাসীন দল লিবারেল পার্টি। সোমবার দেশটির চার প্রদেশে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টি ভোটের আগে ট্রুডোর বিরুদ্ধে বড় ধরনের দুটি কেলেঙ্কারির অভিযোগ আনে। ফলে নির্বাচনে ট্রুডোকে বেশ অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত যেসব প্রদেশে ভোট হয়েছে তাতে ধারণা করা হচ্ছে লিবারেল পার্টিই আবারও জয়ী হতে যাচ্ছে।
দীর্ঘ ৪০ দিন নির্বাচনী প্রচারণা শেষে সোমবার (২১ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় নিউ ফাউন্ডল্যান্ড অ্যান্ড ল্যাব্রাডর প্রদেশে।
একই সময় নোভা স্কটিয়া, প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ড, নিউ ব্রুন্সউইকে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সবশেষ ভোট অনুষ্ঠিত হয় ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাতটায়। মন্ট্রিয়ালে স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে ভোট দেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ভোট দেন বিরোধী কনজারভেটিভ দলের নেতা অ্যান্ড্রু শার।
নির্বাচনের আগাম জরিপ বলছে, পুনরায় ক্ষমতায় আসতে এবার বেশ হিমশিম খেতে হবে ট্রুডোর দল লিবারেল পার্টিকে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হলে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বিরোধী দলের ওপর নির্ভর করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই ট্রুডোর দলের।
হাউস অব কমন্সের ৩৩৮ জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন। এরআগে ১১ সেপ্টেম্বর গভর্নর জেনারেল সংসদ ভেঙে দেন। নির্বাচনের আগে ৪০ দিন ক্যম্পেইন করেন মনোনীত নেতারা।
এবার ৩ প্রধান রাজনৈতিক দলের দুটিরই নেতৃত্বে রয়েছে নতুন মুখ। অর্থাৎ ২০১৫ সালের নির্বাচনে তারা দলের প্রধান ছিলেন না। বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টি নেতা অ্যান্ড্রু শার দলের প্রধানের দায়িত্ব নেন ২০১৭ সালের ২৭ মে। অপরদিকে তৃতীয় শক্তিশালী দল নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) প্রধানের দায়িত্ব পান ভারতীয়-কানাডিয়ান জাগমিত সিং ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ।
২০১৩ সালের ১৪ এপ্রিল লিবারেল পার্টি প্রধান হিসেবে দলের হাল ধরেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ২০১৫ সালের নির্বাচনে তার নেতৃত্বে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে দলটি। ৩৩৮ আসনের মধ্যে ১৮৪ আসনে তারা জয় পান, বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টি জয় পায় ৯৯টি আসনে, ৪৪ আসনে জয় লাভ করে এনডিপি। বাকি যেসব দল রয়েছে তারা কেউই পার্লামেন্টের দলীয় স্ট্যাটাস পায়নি। অর্থাৎ কমপক্ষে ১২টি আসনে জিততে পারেনি।
উল্লেখ্য, এককভাবে সরকার গঠন করতে গেলে ১৭২টি আসনে জয় পেতে হয়।
জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিবিসির এক জরিপে দেখা গেছে, কনজারভেটিভ পার্টি সামান্য এগিয়ে আছে ক্ষমতাসীনদের চেয়ে। কনজারভেটিভ ৩৪ দশমিক ৮ শতাংশ এবং লিবারেল ৩৩ দশমিক ৮ শতাংশ। লিবারেল পার্টির অবস্থানের কিছুটা অবনমন হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এটি জাস্টিন ট্রুডোর সাম্প্রতিক ‘ব্ল্যাকফেস মেকআপ’ এর ফল, যদিও এই সমালোচনার প্রভাব কাটিয়ে উঠছেন তিনি। অবশ্য অন্য জরিপগুলোতে লিবারেল সামান্য এগিয়ে রয়েছে।