দু’টি কথা। দয়া করে মনযোগ দিবেন। (১৯৯১ – ১৯৯৬) ইং আবার (২০০১ – ২০০৬) প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সময় যখন লোকাল আন্দোলনে কেউ যেতে ভয় পেত কখন এরেস্ট হয়ে যায়, কার বাড়ীতে হামলা হয়, এমন অবস্থায় কর্মব্যস্ততার মাঝেও প্রাণের রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ এর জন্য রাস্তায় নেমে যেতাম কয়েকজন। আস্তে আস্তে সবদিক ভেবেশুনে নেতারা আসতো। সতর্ক করতো বিভিন্ন বিষয়ে তবু নেমে পড়তাম। কারণ বিশ্বাস করতাম আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসা মানে সকল সেক্টরে সমতা, শৃংখলা, বৈষম্য নিরসন, আর্থিক নিরাপত্তা সহ সকল বিষয়ে শান্তি ও স্বস্তি ফিরে আসবে। সাধারন জনগন সহ সকল স্তরের পেশাজীবী, শ্রমজীবী সুফল ভোগ করবেন। আমি একজন বে-সরকারী শিক্ষক হিসেবে ভাবতাম আমার আওয়ামীলীগ সরকার আবার ক্ষমতায় গেলেই আন্তরিকতার সহিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতীয়করণ করে দিবেন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় তা হলো না। কারণ অনেকগুলো থাকলেও আমি আওয়ামীলীগেরই সুবিধাবাদী ( দালাল চক্র) নেতা নামধারী শিক্ষক যারা প্রতিনিয়ত মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়ে ভিন্ন পথে নিয়ে নিজে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছেন, আর শিক্ষকদের বঞ্চিত ককরছেন ন্যায্য অধিকার থেকে। জাতীয়করণ থেকে বিরত রেখে অসন্তোষ তৈরী করছেন জাতির বিবেকদের মাঝে। মনে রাখবেন এখনও অনেকেই আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। দালাল দিয়ে কখনও আওয়ামীলীগ চলেনি আর চলবেওনা। চালাকী করে সাময়িক সুবিধা নিচ্ছেন মাত্র। নির্ধারিত জাতীয় বেতন স্কেলটা ছাড়া অন্য সকল সুবিধাবঞ্চিত হতভাগ্যদের দলে আমরা। বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে আমরা আজ বড় অসহায়। অথচ ইজ্জত নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দিনের পর দিন ঋণের বোঝা চাপছে মাথায়। অন্যান্য চাকুরীজীবী, ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠিত সম্প্রদায় বাঁকাচোখে চায় আমাদের দিকে। তাই সঙ্গত কারণেই আবার রাস্তায় নামতে হবে আমার নিজ পরিবারের বিরুদ্ধেই। মন চায়না। কি করবো? দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাচ্ছেতো। তাই আহবান জানাচ্ছি আমার পুরাতন রাজনৈতিক সহযোদ্ধা যারা এ পেশায় আছেন এবং বর্তমান বিভিন্ন সংগঠনের শিক্ষক নেতাসহ সকল বে-সরকারী শিক্ষক সমাজকে জাতীয়করণের আন্দোলনে দ্বিমত নয়, একমত হয়ে ঝাপিয়ে পড়ুন। আমরা বিভিন্ন ব্যানারে নেতাদের দেখে ক্লান্ত। এরা সবাই নিজেদের চিন্তায় ব্যস্ত।
শিক্ষকগণ কেন সকল ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত? কেন এখনও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলবে তারা? ধুঁকে ধুঁকে মরবে কেন জাতি গঠনের কারিগররা? শিক্ষকতা কি অপরাধ না অভিশাপ?
অল্প বেতনের সংসারে হাজারো চাহিদা। প্রতিনিয়ত আর্থিক দৈন্যতা শিক্ষক জীবনের সংঙ্গী। অর্থের অভাবে একজন শিক্ষকের পারিবারিক, সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন করা রাষ্ট্রযন্ত্রের অবিচার। আসুন, সকল সংগঠন এক হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করি, জাতীয়করণ ও আর্থিক সচ্ছলতা নিশ্চিত হবে।
প্রদীপ কুমার দেবনাথ,
শিক্ষক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট।