মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে আশাশুনি উপজেলার ফকরাবাদ গ্রামের অনিল কৃষ্ণ মণ্ডলের মেয়ে কঙ্কাবতী মণ্ডলের(৪০) সঙ্গে একই উপজেলার গোয়ালডাঙা গ্রামের মনোহর মণ্ডলের ছেলে বিজন মণ্ডলের হিন্দু ধর্ম মতে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর প্রতিবেশী দীপক মণ্ডলের স্ত্রী সন্ধ্যা রানী মণ্ডলের সঙ্গে বিজনের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রতিবাদ করায় কঙ্কাবতীর সঙ্গে বিজনের প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকতো। এরই জের ধরে ২০১৭ সালের ১০জুন রাত ১১টার দিকে বিজন তার স্ত্রীর মুখমণ্ডল ও নাকে লাীঠ দিয়ে আঘাত করে। এতে জ্ঞান হারিয়ে যাওয়া কঙ্কাবতীর গলায় নাইলনের দড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসসরোধ করে হত্যা করে বিজন। পরে কঙ্কাবতীর লাশ বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে বাথরুমের সামনে আম গাছে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার প্রচার দেয় বিজন ও তার পরিবারের সদস্যরা। ২০১৭ সালের ১০ জুন দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে লোকমুখে খবর পেয়ে ১১ জুন সকালে বিজনের বাড়িতে যেয়ে কঙ্কাবতীর রক্তাক্ত লাশ দেখতে পায় বাবা অনিল কৃষ্ণ মণ্ডল ও তার স্বজনরা। জিজ্ঞাসা করায় গ্রামবাসির সামনে বিজন তার স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তাকে পুলিশে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা অনিল কৃষ্ণ মণ্ডল বাদি হয়ে ওই বছরের ১১ জুন রাতে জামাতা বিজন কুমার মণ্ডলসহ অজ্ঞাতনামা তিন জনের বিরুদ্ধে আশাশুনি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
১২ জুন বিজন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ জাহিদ হোসেনের কাছে পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ার কারণে স্ত্রীকে নির্যাতন চালিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক ২০১৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এজাহারভুক্ত বিজন মণ্ডলের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার নয়জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও নথি পর্যালোচনা শেষে আসামী বিজন মণ্ডলের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাািণত হওয়ায় বিচারক শেখ মফিজুর রহমান তার মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেন।