প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে আজ রোববার (৯ জুলাই) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আমরাই করেছি। আগে মাত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল, আমরা আরও কয়েকটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা ইনস্টিটিউট করে দিয়েছি। কৃষি, ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়, এভিয়েশন ও এরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়- এসব বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় আমরা করে দিয়েছি। কারণ আমরাও চাঁদে যাব, আমরাও তো প্লেন বানাব। আমাদের সরকার শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমি এবং আমার ছোটো বোন শেখ রেহানা। আসলে আমরা তো আমাদের পড়া শেষ করতে পারিনি। ছোটবেলা থেকেই আমার বাবা বারবার জেলে গেছেন। আর বারবার আমরা হোঁচট খেয়েছি। আর ১৯৭৫ সালে আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। রেহানা তখন ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজে পরীক্ষা দেবে, সেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাকে আমি সাথে নিয়ে যাই। তারপর তো আমরা দেশে ফিরতে পারলাম না, পড়াশোনা শেষ করতে পারলাম না। সেটা একটা দুঃখ থেকে গেছে। এরপর অনেক অনাররি ডিগ্রি পেয়েছি, কিন্তু তাতে তো মন ভরেনি। তারপর আমাদের ছেলেমেয়েদের একটা কথাই শিখিয়েছি যে, তোমাদের জন্য আমরা কোনো সম্পদ রেখে যেতে পারব না। একটাই সম্পদ, সেটা হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষা কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।
তিনি আরো বলেন, কোনো ধন-সম্পদই কাজে আসে না। একটা জিনিসই কাজে আসবে, সেটা হচ্ছে শিক্ষা। এবার কোভিড-১৯ এর সময় নিশ্চয়ই একটা শিক্ষা হয়েছে যে, অর্থ-সম্পদ সবসময় কাজেও লাগে না। কিন্তু বিদ্যা যদি থাকে কিছুনা কিছু করে খাওয়া যাবে।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যে কাজগুলো মানুষের কল্যাণে করি, সেগুলো যদি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় সেটা আমাদের দেশেরই ক্ষতি। তাই এবার আমি আলাদা পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রতিটি ক্ষেত্রে আমি আলাদা ট্রাস্ট ফান্ড করে দিয়েছি। আমরা সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক করে চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া শুরু করি। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর খালেদা জিয়া সেটা বন্ধ করে দেয়। এভাবে চিকিৎসা সেবা পেলে নাকি এলাকার লোক সবাই নৌকায় ভোট দেবে। তাই কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন দেশের দায়িত্ব নিই, তখন তো সবার কথা বিবেচনা করতে হবে। কে কাকে ভোট দেবে, সেটা তার নিজস্ব ব্যাপার। এটা তার ভোটের অধিকার। মানুষের সেবাটা মানুষ পাবে না কেন?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ২০১২ সালে আমি গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট (জিআইইউ) প্রতিষ্ঠা করি। “সবার আগে নাগরিক” এ মূলমন্ত্রকে ধারণ করে নাগরিক সেবার মান উন্নয়নে নতুন নতুন উদ্ভাবনের দায়িত্ব দেওয়া হয় জিআইইউকে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই ইউনিটটি সেবা সহজিকরণ ও গবেষণামূলক কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি ২০১৮-১৯ অর্থবছর হতে পরিচালনা করে আসছে প্রধানমন্ত্রীর ফেলোশিপ কার্যক্রম। আমি জিআইইউ টিমকে ধন্যবাদ জানাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, আমাদের সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে বিগত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে। এ সময়ে মাথাপিছু আয় প্রায় ৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। জিডিপি ৭.৭৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৪৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মানুষের গড় আয়ু ৫৫ বছর থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭৩ বছর। নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার ইত্যাদি নানা আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে অবস্থান করছে। এসব সম্ভব হয়েছে অব্যাহত গণতান্ত্রিক পরিবেশ এবং স্থিতিশীলতা বজায় থাকার কারণে। এ সময়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে।
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজ বাপ্পি