রাশিয়ায় বিমান দুর্ঘটনায় ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন নিহত হয়েছেন। বুধবার (২৩ আগস্ট) মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ যাওয়ার সময় টাভার অঞ্চলে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
বুধবার মস্কো টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বুধবার প্রিগোশিনকে বহনকারী ওই বিমান রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে যাচ্ছিল।
রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম আরআইএ নভোস্তির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রিগোশিনসহ ওই বিমান এ ১০ আরোহী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন ছিলেন ক্রু। দুর্ঘটনায় সবাই নিহত হয়েছেন।
রাশিয়ার জরুরি পরিস্থিতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিমান দুর্ঘটনায় নিহত আরোহীদের একজনের নাম প্রিগোশিন। তবে ওই দুর্ঘটনা নিয়ে আর কোনো তথ্য জানাননি তাঁরা।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ওয়াগনার গ্রুপ–সংশ্লিষ্ট টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রে জোন জানায়, মস্কোর উত্তরের একটি এলাকায় আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার গুলিতে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে।
ওয়াগনার প্রধান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশটিতে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছিল ভাগনার সেনারা। তবে রুশ সামরিক নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ ছিল প্রিগোশিনের।
এ অসন্তোষের প্রকাশ ঘটে গত ২৩ জুন। বিদ্রোহ করে বসেন প্রিগোশিন। রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাতের জন্য ইউক্রেন সীমান্ত থেকে মস্কোর দিকে অভিযান শুরু করেন তিনি। পথে কয়েকটি শহর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেন ভাগনারের যোদ্ধারা। ভাগনারের নিয়ন্ত্রণে যায় গুরুত্বপূর্ণ একটি রুশ সেনাঘাঁটি।
প্রিগোশিনের বিদ্রোহের জেরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন। পরবর্তী সময়ে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় অভিযান বন্ধের ঘোষণা দেন প্রিগোশিন। সমঝোতায় বলা হয়, প্রিগোশিনসহ ভাগনার সেনারা রাশিয়া ছেড়ে বেলারুশে চলে যাবেন।
বিদ্রোহের পর ওয়াগনার সেনারা বেলারুশে চলে যান। তবে ওয়াগনার প্রধান প্রিগোশিনের অবস্থান নিয়ে জল্পনা কল্পনা রয়ে যায়। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, তিনি বেলারুশে আছেন। এমনকি তাঁর রাশিয়া সফর এবং পুতিনের সঙ্গে দেখা করার খবরও জানা যায়। কিন্তু কখনোই প্রকাশ্যে আসেননি তিনি।
সম্প্রতি প্রিগোশিনের একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়। ওয়াগনার গ্রুপের টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলোতে পোস্ট করা ওই ভিডিওতে তাঁকে যুদ্ধের সাজপোশাকে দেখা যায়। ভিডিও দেখে ধারণা করা হয়, তিনি আফ্রিকায় আছেন। ভিডিওতে তিনি বলেন, ওয়াগনারে তাঁরা নতুন যোদ্ধা নিয়োগ করবেন।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম