বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকায় রাজধানীতে ভাঙচুর, সরকারি কাজে বাধা, চুরি, অগ্নিসংযোগ, সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি, হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে ২৯০টি মামলা করা হয়। এরমধ্যে ৬২টি হত্যা মামলা রয়েছে। অধিকাংশ মামলার বাদী ছিল পুলিশ। ১৭ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত এসব মামলায় আসামি করা হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ মোট ৩০৫৬ জনকে। হত্যা মামলা ছাড়া বাকি ২২৮টি মামলায় সম্প্রতি সব আসামিকে অব্যাহতির আবেদন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। পরে প্রতিবেদন গ্রহণ করে আসামিদের অব্যাহতির আদেশ দেন আদালত।
অব্যাহতি পাওয়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সায়েদুল আলম বাবুল, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন, জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য সামিউল হক ফারুকী, বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ আসীম, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডা. সাখাওয়াত হোসেন।
উক্ত আদেশে আদালত বলেছেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণের মতো কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তবে ভবিষ্যতে মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত আসামিদের সন্ধানসহ নির্ভরযোগ্য মতো তথ্য পাওয়া গেলে মামলা পুনরুজ্জীবিত করা হবে। আসামিদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।
উল্লেখ্য, ডিএমপির রমনা বিভাবে মামলা হয়েছে ৪২টি। এছাড়া লালবাগ বিভাগে ১৭টি। মতিঝিল বিভাগে ৪০টি। ওয়ারী বিভাগে ৫৫টি। তেজগাঁও বিভাগে ৩৩টি। মিরপুর বিভাগে ২৬টি। উত্তরা বিভাগে ৩১টি ও গুলশান বিভাগে মামলা হয়েছে ৪২ টি। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন, মামলার ঘটনার সঙ্গে গ্রেফতার আসামিরা জড়িত না। এসব ঘটনা অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারী কর্তৃক সংঘটিত হওয়ায় তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। মামলার তদন্ত অহেতুক ফেলে না রেখে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের পক্ষে মতামত দিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। ভবিষতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের তথ্য পাওয়া গেলে মামলাগুলো পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করা হবে।
ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের এডিসি (পুলিশ সুপার পদে সুপারিশপ্রাপ্ত) ফখরুজ্জামান জুয়েল বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ২৯০টি মামলা হয়। এসব মামলায় আসামিদের অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেছেন আদালত।
আজ ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ১১:৫২ | রবিবার
ডিবিএন/এসই/ এমআরবি