কাজাখস্তানে একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। আজারবাইজানের রাজধানী বাকু থেকে রাশিয়ার চেচনিয়ার গ্রোজনি শহরের উদ্দেশে যাত্রাকালে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৩৮ জন নিহত হয়েছেন। দুই শিশুসহ জীবিত উদ্ধার হয়েছেন ২৯ জন।
কাজাখস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী কানাত বোজুমবায়েভ বলেছেন, উদ্ধার অভিযানে ধ্বংস্তূপ থেকে ২৯ জনকে বের করে আনা হয়েছে। ১১ জনের অবস্থা গুরুতর।
স্থানীয় সময় বুধবার এমব্রেয়ার ১৯০ উড়োজাহাজের জে২-৮২৪৩ ফ্লাইটটি কাজাখ শহর আকতাও থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে জরুরি অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় উদ্ধারকারী দল। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিমান বিধ্বস্তের কারণ এখনও জানা যায়নি।
রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, কুয়াশার কারণে যাত্রাপথ পরিবর্তন করেছিল উড়োজাহাজটি। পরে আকতাউ বিমানবন্দরের কাছে সেটি বিধ্বস্ত হয়।
রয়টার্স লিখেছে, উড়োজাহাজটি মাটিতে আছড়ে পড়ার পর বিস্ফোরণে অগ্নিগোলক তৈরি হয় এবং কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে।
উড়োজাহাজটি ঠিক কী ধরনের সমস্যায় পড়েছিল, তা এখনো স্পষ্ট নয়। কাজাখ কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখা শুরু করেছে। উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি এমব্রায়ারও তদন্তে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে।
রাশিয়ার এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রথমিকভাবে পাওয়া তথ্যে তাদের ধারণা হয়েছে, পাখির সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর পাইলট জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন।
বিধ্বস্ত স্থানের ফুটেজে দেখা গেছে, আগুনে পুড়ে যাওয়া বিমান থেকে বের করা হচ্ছে কয়েকজনকে।
যারা বেঁচে গেছেন তাদের কেউই কাজাখ নাগরিক নন বলে জানিয়েছেন উপ–প্রধানমন্ত্রী বোজুমবায়েভ। তিনি বলেন, মরদেহগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। বেশিরভাগই পুড়ে গেছে। এখন মরদেহ মর্গে থাকবে এবং শনাক্ত করা হবে।
তিনি জানান, জীবিত একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তার জ্ঞান ফেরেনি। হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
আজারবাইজানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, একটি অনুসন্ধান দল উড়োজাহাজটির ব্ল্যাক বক্স খুঁজে পেয়েছে। কাজাখস্তান সরকার দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান এবং যাত্রীদের পরিবারকে সহায়তা করার জন্য একটি কমিশন গঠন করেছে।
কাজাখ পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আরোহীদের মধ্যে ৩৭ জন আজারবাইজারের নাগরিক, ১৬ জন রাশিয়ার, ৬ জন কাজাখ, ৩ জন কিরগিস্তানের নাগরিক।
এর আগে কাজাখস্তানের পরিবহন মন্ত্রণালয় মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে লেখেন, ‘বাকু-গ্রোজনি রুটে যাওয়া উড়োজাহাজটি আকতাউ শহরের কাছে বিধ্বস্ত হয়েছে। উড়োজাহাজটি আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের ছিল।’
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ রাশিয়া সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশের পথে রওনা হন। একটি সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি রাশিয়া গিয়েছিলেন।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম