রাজকাহন: যার সঙ্গেই কথা বলি শুনি দেশের অবস্থা ভাল না। রাজনৈতিক নেতারাও বলে আগামি নির্বাচন সহজ হবেনা। কোন অবস্থাটির জন্য দেশের নেতারা এমনটি বলেন জানিনা। সব কালে সব সবসময়ই বাংলাদেশের নির্বাচনকালীন সময়টি এমনই দেখেছি। একদল ক্ষমতার জন্য লড়াই করে আর অন্যদল ক্ষমতায় থাকতে যুদ্ধ করে। আতঙ্কিত করে রাখে জনগনকে। যুদ্ধাং পরিস্থিতি বিরাজ করে দেশজুড়ে। ফলাফলটি নির্ভর করে কোন দল কতবেশী মাঠকর্মী নামিয়েছে তার উপর। আর একবার নির্বাচিত হতে পারলেই ভাগ্যের চাকা ঘুড়তে শুরু করে। জনগনের শত:স্ফুর্ত অংশগ্রহণ খুব একটা দরকার পরে না।
কিন্তু এবার আসলেই দেশের অবস্থা ভাল নেই। কারন ৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে তারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে অকার্যকর করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে। ৭১ সালে যে সব দেশ মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল, সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল পাকিস্তানের পক্ষে। তারাই এখন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নামে নানা রকম নিষেধাজ্ঞা জারি করছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।
দ্রব্যমূল্য সহ বহু রকম সমস্যার কারনে দেশ এখন সঙ্কট। করোনা ডেঙ্গু আর ইউক্রেন যুদ্ধের কারনেও জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। নিত্য খেটে খাওয়া মানুষের নাভিশ্বাস উঠেগেছে জীবন বাঁচাতে। এমন সমস্যাও বিশ্বজুড়েই। এসব সমস্যা নিয়ে কোন দল কথা বলেনা। কিভাবে দ্রব্যমূল্য ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা যায় তা নিয়ে কেউ ভাবে না। সব সরকারের উপর চাপিয়ে তারা গণতন্ত্র রক্ষার দাবী নিয়ে আন্দোলন করছে। আসলে দ্রুত ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে নেমেছে। সঙ্গে মোড়ল রাষ্ট্রের সতীর্থদের ডেকে এনেছে তাদের পক্ষে কথা বলার জন্য। রাজনীতির এমন কৌশল বাংলাদেশে নতুন নয়। দেশের স্বার্থ বিক্রি করেও ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু দেশের জনগণ এই অপশক্তিকে চিনে গেছে। রাষ্ট্র বিরোধী, দেশের জনগণের স্বার্থ বিরোধী ষড়যন্ত্র যারা করে তাদেরকেও জনগণ চিনে রেখেছে।
✪ আরও পড়ুন:গণতন্ত্র
আরও একটি বিষয় যুক্ত হয়েছে এবার। দেশ বদলে গেছে। অভাবনীয় সাফল্য দেশের অবস্থান বদলে দিয়েছে। দক্ষিন বঙ্গের অবহেলিত জনগোষ্ঠি এখন দেশ গঠনে সঙ্গী হয়েছে পদ্মা সেতুর কারনে। কৃষি উৎপাদন এখন দক্ষিনের লোনা জলেও সম্ভব হচ্ছে কৃষি বিজ্ঞানীদের কারনে। পোশাক শিল্পে বাংলাদেশ এখন চীন ভারত আর পাকিস্তান কে পেছনে ফেলে বিশ্বের এক নম্বরে।দেশের জনশক্তি বাজার ধরেছে বিশ্বে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন রেকর্ড ছুঁয়েছে। ৩০ লক্ষ টন খাদ্য ঘাটতি পুষিয়ে বাংলাদেশ এখন রপ্তানীকারক দেশে পরিনত হয়ে গেছে। যে কারনে বিশ্বের মন্দা অর্থনীতি কিংবা দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি হলেও বাংলাদেশে নিত্য পন্যের অভাব হয়নি।
✪ আরও পড়ুন:বিদেশী প্রেস্ক্রিপশনে শেখ হাসিনা চলেননা
করোনার মহাদুর্যোগে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা ছিল অনেক উন্নত দেশের চেয়েও কম। আই এম এফ সহ সকল সংস্থা বাংলাদেশ সব সূচকে এগিয়ে গেছে বলে রিপোর্ট করেছে। এই সাফল্যই দেশের বিরোধী দল আর ক্ষমতালিপ্সু স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি মেনে নিতে পারছেনা। তাই এখন সর্বশক্তি নিয়োগ করে বিদেশী অর্থ আর সহায়তায় আন্দোলনে নেমেছে সরকার পতনের। এই আন্দোলনের ফলাফল কি তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতেই হবে। তবে এই আন্দোলনের হুমকি ধামকি জনমনে ভীতির সঞ্চার হয়েছে সঙ্গতভাবেই। ভয়ের আরও কারন আছে। আমরা যারা স্বাধীনতাপূর্ব রাজনীতি দেখেছি, মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি মুক্তিযুদ্ধ করেছি তাদের জন্য হিরো আলম কিংবা ভি পি নুরের বক্তব্য শুনে ভীত না হওয়ার কোন কারন নেই। বেশী ভয়ঙ্কর হল তাদের জনসমর্থন আর গনমাধ্যমে তাদের প্রচার প্রচারনা দেখে। বাংলাদেশের রাজনীতি যদি ভি পি নূর কিংবা হিরো আলমের মত হয় তাহলে দেশ সঙ্কটে এবং দেশের অবস্থাটি আসলেই ভাল নেই!!
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি