স্ত্রীর কাছে ধরা পড়ার ভয়ে দিল্লি বিমানবন্দরে ই-মেইলে বোমাতঙ্ক ছড়ায় এক যুবক। তার নাম নজরুল ইসলাম (২৯)। তিনি বাংলাদেশি নাগরিক। ভারতের দিল্লি বিমানবন্দরে ঘটনা এটি। সোমবার (৪ মার্চ) কলকাতার নিউমার্কেটের একটি আবাসিক হোটেল থেকে তাকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, স্ত্রীর কাছে মিথ্যা বলে ধরা পড়ার ভয়ে বিমানবন্দরে বোমাতঙ্ক ছড়ান নজরুল। দিল্লি-কলকাতাগামী একটি ফ্লাইটে বিস্ফোরক নিয়ে বিমানবন্দরে ভুয়া ই-মেইল পাঠান। এ অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তাকে দিল্লি পুলিশ রিমান্ডে নিয়েছে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারির এ ঘটনার জেরে তদন্ত করে দিল্লি পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখা ও স্পেশাল টাস্ক ফোর্স।
২০২৩ সালে সোনিয়া নামে এক নয়াদিল্লির নারীকে বিয়ে করেন। স্ত্রীকে বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণার কাজে যুক্ত রয়েছেন। আদতে নজরুল কলকাতায় থাকতেন। বিয়ের পর স্ত্রী সোনিয়া বারবার যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যেতে বলেন। সে কথা নানাভাবে এড়িয়ে যেতেন ওই যুবক। দিল্লিতে চলমান কৃষক আন্দোলনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরতে পারছেন না বলেও স্ত্রীকে জানান।
স্ত্রীর সন্দেহ হলে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ভাইকে কলকাতায় নজরুলের থাকার বিষয়টি সত্যতা যাচাই করতে পাঠাতে চায়। বিষয়টি নজরুল জেনে যায়। শ্যালককে বিমানবন্দরেই আটকাতে ‘এক যাত্রী বোমা বহন করছেন’ বলে দিল্লি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে ভুয়া ই-মেইল পাঠান। আর এতেই বোমাতঙ্ক ছড়ায় গোটা বিমানবন্দরে।
পাঞ্জাবের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন নজরুল। সেখানে পড়ার সময় সোনিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় তার। মাস্টার্স শেষে ২০২০ সালে নজরুল বাংলাদেশে ফিরলেও তাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। পরে দু’জনেই বিয়ে করেন।
নজরুলকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, নজরুল কলকাতার নিউমার্কেটের একটি হোটেলে প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে ছিলেন। সে বাংলাদেশ থেকে আনা প্রায় ৫০ লাখ টাকা প্রতারণা করে লুকিয়ে রাখতেই কলকাতায় থাকেন। তার পাসপোর্ট, ফোন এবং ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। নজরুল ভুয়া ই-মেইল পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে দিল্লি নেয়া হয়েছে। ভুয়া ই-মেইল পাঠানোর দায়ে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
দিল্লি পুলিশ কর্মকর্তা রাংনানি জানান, এভিয়েশনের ওপর একটি কোর্স করেছেন বলে জানিয়েছেন নজরুল। পাওনাদারদের কাছ থেকে বাঁচতে তিনি ভারতে থাকছেন।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম