মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী-ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশটির ভোটাররা আজ স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দেশের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার জন্য ভোট দেয়া শুরু করবেন। এ নির্বাচনে ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শুধু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট নয়, বরং মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে হবেন, তা নির্ধারণ করে ‘ইলেকটোরাল কলেজ’। ইলেকটোরাল কলেজ নামের ব্যবস্থায় ৫৩৮ জন ইলেকটর নির্বাচিত হন। তারাই শেষমেশ নির্ধারণ করবেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিটি প্রদেশে ভোটের পদ্ধতির নির্দিষ্ট কিছু বিধি রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই তা আলাদা আলাদা। মোটের ওপর ভোটাররা তিনটি প্রাথমিক পদ্ধতির মাধ্যমে ভোট দিয়ে থাকেন-
১. হ্যান্ডমার্ক করা কাগজের ব্যালট: প্রেসিডেন্ট ভোটে সবচেয়ে প্রচলিত ও সহজ পদ্ধতি। প্রায় ৭০ শতাংশ কাগজের ব্যালট ব্যবহার করে এই পদ্ধতিতে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেন।
২. ব্যালট মার্কিং ডিভাইস (বিএমডি): প্রায় ২৫ শতাংশেরও বেশি ভোটার এই কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ভোটদান পদ্ধতি ব্যবহার করেন। এই পদ্ধতি ভোটারদের একটি স্ক্রিনে বিকল্প নির্বাচন করতে দেয় ও তারপর তাদের পছন্দ নিশ্চিত করতে একটি কাগজের ব্যালট প্রিন্ট করা হয়। ‘হেল্প আমেরিকা ভোট অ্যাক্ট’ মেনে চালু করা এই পদ্ধতিতে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ পদ্ধতিও রয়েছে।
৩. ডাইরেক্ট রেকর্ডিং ইলেক্ট্রনিক (ডিআরই): এ বৈদ্যুতিক যন্ত্রনির্ভর পদ্ধতি অনেকটা ইভিএমের মতোই। কোনো কাগজ ছাড়া ইলেকট্রনিক ব্যবস্থায় জনতার রায় ‘মেমোরি’ বন্দি করা হয়। লুইজিয়ানা ও নেভাদার মাত্র ৫ শতাংশ ভোটার এ পদ্ধতি অবলম্বন করেন। কিন্তু গতবার নেভাদায় এ পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে। তাই এবার ভোটদানের হার কম হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগণনা হয় যেভাবে-
১. হ্যান্ডমার্ক করা ব্যালট পেপার এবং বিএমডিতে দেওয়া ভোটগুলো সাধারণত ‘অপটিক্যাল স্ক্যানার’ ব্যবহার করে স্ক্যান করা হয়। এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফলাফল নথিভুক্ত করা যায়। এ প্রক্রিয়াটি একটি প্রাদেশিক স্তরের নির্বাচন কর্তৃপক্ষ পরিচালনা করেন। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে গণনার পাশাপাশি প্রয়োজনে হাতে ভোটগণনারও ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া আগাম ভোটের ক্ষেত্রে চালু ‘মেইল ইন ব্যালট’ ব্যবস্থায় দেওয়া ভোটের বৈধতা যাচাই ও গণনার প্রক্রিয়াও রয়েছে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে। প্রাদেশিক নির্বাচন কর্তৃপক্ষকে ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফলাফল ফেডারেল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে হয়।
২. ইলেকটোরাল ভোট সিনেটর, হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভস সদস্য গভর্নর বা এমন কেউ হন না। এর জন্য একেবারে আলাদা একটি ভোটার দলকে নির্বাচন করা হয়। এটি দুই ধাপে ঠিক হয়। প্রথম ধাপটি রজনৈতিক দলগুলোর নিয়ন্ত্রণে। সাধারণ নির্বাচনের আগে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের পক্ষ থেকে তাদের মনোনীত ইলেকটোরাল ভোটারের তালিকা জমা দেওয়া হয়, যা ‘স্লেট’ নামে পরিচিত। সাধারণ ভোটাররা এই স্লেট নির্বাচন করেন। অধিকাংশ প্রদেশের যে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জয়ী হন, তার দলের স্লেটটিই ইলেকটোরাল ভোটার হিসেবে নির্বাচিত হয়। কোন অঙ্গরাজ্যে কত ইলেকটোরাল ভোট থাকবে, তা নির্ধারিত হয় সেখানে কতগুলো কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট রয়েছে। প্রতিটি কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্টের জন্য একটি করে ভোট ও দুজন সিনেটরের জন্য দুটি ভোট বরাদ্দ থাকে। এবার ক্যালিফোর্নিয়ায় ৫২টি কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট রয়েছে। অন্যান্য সব অঙ্গরাজ্যের মতোই সেখানে রয়েছে ২টি সিনেট আসন। ফলে মোট ইলেকেটোরাল ভোটের সংখ্যা ৫৪।
আজ ২০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ৩রা জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৮:০৫ | মঙ্গলবার
ডিবিএন/এসই/ এমআরবি