‘ইমালোন ঙাঙসি, ইমালোন ইসি, ইমালোন নুংশিসি’ এই শ্লোগান নিয়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মণিপুরি ভাষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে মনিপুরী ভাষা দিবস-উদযাপিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও মনিপুরী ভাষা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার বিকালে উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের হকটিয়ারখোলা গ্রামের মনিপুরী ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মণিপুরি ভাষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কবি এ কে শেরামের সভাপতিত্বে ও কে এইচ সমেন্দ্র সিংহ এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মণিপুরি ভাষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ইবুংহাল শ্যামল, কবি ও শিক্ষক সাজ্জাদুল হক স্বপন, হকটিয়ারখোলা মণিপুরী ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক বৃন্দা রাণী সিনহা প্রমুখ।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হকটিয়ারখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি তাখেলম্বম অশোক, শিক্ষিকা কনথৌজম শিল্পী, এনজি শিল্পী, অরুনা সিনহা, শিক্ষিকা অনুরাধা সিনহা, শিক্ষক রাজকুমার সিংহ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মনিপুরী ভাষার মতো সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের একটি উন্নত ভাষাকে দ্রুত সাংবিধানিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিজস্ব লিপিতে লেখা মণিপুরি ভাষায় প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুদের শিক্ষাদানের কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানানো হয়।
উল্লেখ্য, মণিপুরি জাতির মাতৃভাষার নাম ‘মনিপুরী ভাষা’। এই ভাষা সেই প্রাচীনকাল থেকেই মনিপুরী জাতির মূলভূমি ভারতের অন্যতম রাজ্য মণিপুরের সরকারি ভাষা এবং এই ভাষায় সেখানে শিক্ষামাধ্যমের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। মনিপুরী ভাষা ও সাহিত্যের রয়েছে কয়েকহাজার বৎসরের সুপ্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্য। ভারতে মনিপুরী ভাষাভাষীদের দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে ১৯৯২ সালের ২০ আগস্ট ভারত সরকার সংবিধানের অষ্টম তপশীলে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে মনিপুরী ভাষাকে ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তাই সারা বিশ্বের মনিপুরী ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী এই দিনটিকে ‘ মনিপুরী ভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকেন।
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি