শেখ হাসিনা সরকারের আমলে পাচার হওয়া প্রায় এক লাখ কোটি টাকার খোঁজে পূর্নাঙ্গ শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই কাজে সংস্থাটিকে সাহায্য করছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা। এরই অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) লিগ্যাল অ্যাটাচে রবার্ট ক্যামেরুন ও এফবিআই এর সুপারভাইজার স্পেশাল এজেন্টের সমন্বয়ে একটি টিম দুর্নীতি দমন কমিশনে এসেছেন।
আজ সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে দুপুর ১টা ১০ মিনিটে তারা উপস্থিত হন।
দলটি দুদকের মানি লন্ডারিং ও লিগ্যাল শাখার মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ সভা করবে বলে জানা গেছে। পাচারকারীদের ধরতে ও পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে বেশ জোরেশোরেই কাজ শুরু করেছে সংস্থাটি।
ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রায় ২০০ ভিআইপি ব্যক্তির বিরুদ্ধে গোপন ও প্রকাশ্যে অনুসন্ধানে নেমেছে। যার মধ্যে রয়েছে তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সাবেক এমপি, ব্যবসায়ী, পুলিশ ও আমলাদের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
অনুসন্ধান ও তদন্ত কাজ আরো নিখুঁত করতে এবং সরকার গঠিত টাস্কফোর্সে কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত দেশি-বিদেশি সহায়তা নিতে যাচ্ছে সংস্থাটি। এরই ধারাবাহিকতায় এফবিআই টিম দুদকে বৈঠক করছেন।
সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, এফবিআইয়ের সঙ্গে আলোচনার প্রধান বিষয় হচ্ছে যৌথ টাস্কফোর্স। ওই টাস্কফোর্স কীভাবে কাজ করলে পাচার করা অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হবে, আমরা এ বিষয়ে তাদের সহযোগিতা চাইব। দুদকের সঙ্গে এফবিআইয়ের সভা নতুন নয়। তবে এবারের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। এফবিআইয়ের সঙ্গে একটি এমওইউ স্বাক্ষর করার জোর প্রচেষ্টা থাকবে।
তিনি বলেন, যৌথ টাস্কফোর্সে তাদের সরাসরি অংশগহণ থাকবে কিনা, সে বিষয় নিয়েও আলোচনা হবে। তারা পরামর্শক হিসেবেও থাকতে পারে। সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। তাদের সঙ্গে আলোচনার পর বিষয়টি পরিষ্কার করা যাবে।
এদিকে, রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে টাস্কফোর্স গঠন করার কথা জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সভা শেষে গণমাধ্যমকে বলেন, টাস্কফোর্সের কর্মপদ্ধতি কী হবে, কারা থাকবে, এর প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ চলছে। কিছুদিনের মধ্যে এই টাস্কফোর্স দৃশ্যমান হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ব্যাংক খাতের সংস্কারে আলাদা টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।
জানা গেছে সরকারের বিশেষ টাস্কফোর্সে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), দুর্নীতি দমন কমিশন, অর্থ বিভাগ, এনবিআর, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) প্রতিনিধিরা থাকছেন।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম