ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের মুখে থাকা কুড়িগ্রামের চর ভগপতিপুর সরকারী কমিউনিটি ক্লিনিকটি অবশেষে ব্রহ্মপুত্র নদে বিলিন হয়ে গেছে। ক্লিনিকটি সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চলের চর ভগপতিপুর এলাকায় অবস্থিত ছিল। মঙ্গলবার (৩০ মে) সন্ধ্যার দিকে চর ভগপতিপুর সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিকটি ব্রহ্মপুত্রের গর্ভে বিলীন হয়।
এর আগে ওই এলাকার একটি স্কুলও ভাঙনের শিকার হয়। এছাড়াও সড়িয়ে নেওয়া হয়েছে একটি মসজিদ ও একটি আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দাদের। ভাঙন আতংকে দিন পার করছে ব্রহ্মপুত্র নদসহ অন্যন্য নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৬টি নদ-নদী বেষ্টিত কুড়িগ্রাম জেলা। এখানে গত মাস খানেক আগ থেকে বিভিন্ন নদ নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে ব্রহ্মপুত্র,ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার নদ নদীর বিভিন্ন স্পষ্টে ভাঙন দেখা দেয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভাঙনের কবলে পড়ে ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার শত শত বিঘা আবাদি জমি ও অনেক বসতবাড়ি। বিশেষ করে চর ভগপতিপুর এলাকায় গত দুই সপ্তাহে প্রায় ৪০টি পরিবার ভিটেমাটি হাড়িয়ে নিঃস্ব হয়েছে।
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ভগপতিপুর এলাকার নজরুল ইসলাম ও মতিয়ার রহমান বলেন, পানি বৃদ্ধির কারণে বেশ কিছুদিন থেকে আমার এখানে খুবই ভাঙন। অনেকের বাড়ি ঘর নদীতে চলে গেছে। একটা মাত্র ক্লিনিক ছিল তাও নদীতে গেছে। আর যে জীবনে এখানে ক্লিনিক হবে কি না আল্লাহ পাক জানেন। ভাঙন দেখে খুবই কষ্ট লাগছে ভাই। কিন্তু করার তো কিছু নাই।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল গফুর বলেন, আমার ইউনিয়নটি ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত। বেশিরভাগ এলাকাই চর। যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই বিছিন্ন। চর ভগপতিপুর এলাকার একটি মাত্র কমিউনিটি ক্লিনিক ছিল সেটিও নদীতে বিলীন হয়েছে। প্রায় ৩৬টির মত বসতবাড়ি, একটি স্কুল ভাঙনের শিকার হয়। একটি মসজিদ ও আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা সড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে। এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের গাফলতির কারণে ক্লিনিকটি নিলামে বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। ক্লিনিকটি যাই বিক্রি করুক সরকারের তো লাভ হতো। তবে সেটি করেনি স্বাস্থ্য বিভাগ।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, অনেক চেষ্টা করেও ক্লিনিকটি রক্ষা করা গেলো না। পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসকে বলে প্রায় ৪ হাজার জিও ব্যাগ সেখানে ফেলানো হয়েছে। এতোদিন নিয়ন্ত্রণও ছিল, হঠাৎ করে ভেঙে গেছে গতকাল। পানি উন্নয়ন বোর্ডও অনেক চেষ্টা করেছে। তাও ক্লিনিকটি রক্ষা করা যায়নি। কোন উপায় ছিল না আসলে আমরা চেষ্টা করেই গেছি।
বিষয়টি জানতে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজ বাপ্পি