ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী অফিসের টাকা রাখেন সিন্দুকে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো নিয়োগ দেন জনবল, মর্জিমাফিক নির্ধারণ করেন বেতনও। পিছিয়ে নেই রেজিস্ট্রার। দুবছর আগে মৃত ব্যক্তিকে ভাইভা বোর্ডে আমন্ত্রণ জানিয়ে জন্ম দেন সমালোচনার।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, রেজিস্ট্রার ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের এমন কর্মকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
যেখানে সারা বিশ্বজুড়ে আধুনিক ব্যাংকিংয়ে চলছে লেনদেন। নিয়মানুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অফিসের লেনদেন ব্যাংকিং চ্যানেলে পরিচালনার বিধান থাকলেও ব্যতিক্রম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস। ১৭ বছর ধরে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা বাহালুল হক চৌধুরী ব্যাংকের ধারেকাছেও যান না। আনুষঙ্গিক ব্যয় শেষে টাকা জমা রাখেন নিজের সিন্দুকে। আর কোনো বিজ্ঞপ্তি না দিয়েই নিয়ম বহির্ভূতভাবে ৫৩ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। বেতন কাঠামো ঠিক করেছেন নিজের মর্জিমাফিক।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
নাম প্রকাশ না করা শর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, সিন্দুকে টাকা রাখার বিষয়ে তার বিরুদ্ধে অনেক নিউজ হয়েছে, কিন্তু ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সেই সঙ্গে অবৈধভাবে ৫৩ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন, সেখানেও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
সিন্দুকে টাকা রাখার বিষয়ে এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ যুগে সিন্দুকে টাকা রাখার বিষয়টি হাস্যকর। এখানে অনৈতিক লেনদেনের বিষয় থাকবে না, তা কি করে হয়?
আর দুই লাখ কেজি পুরাতন কাগজ সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে বিক্রি না করে নিজের পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কম দামে বিক্রির অভিযোগ ওঠে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্বে। যা নিয়ে হয়েছে লিখিত অভিযোগও। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের এমন কাণ্ডে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও ৫৩তম সমাবর্তন বক্তাকে সম্বোধনের ক্ষেত্রে বাংলা- ইংরেজি তালগোল পাকিয়ে রেজিস্ট্রার বিদেশি অতিথির সামনে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশের সৃষ্টি করেন। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর ছেলে দুই বছর আগে মারা যাওয়া বরেণ্য শিল্পী মুর্তজা বশীরকে ভাইভা বোর্ডে আমন্ত্রণ জানিয়ে জন্ম দিয়েছেন বিতর্কের। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন মুর্তজা বশীরের পরিবারের সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অফিসে গিয়েও পাওয়া যায়নি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে। অনুষ্ঠানিক বক্তব্য না দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়মবহির্ভূত জনবল নিয়োগ ও সিন্দুকে টাকা রাখাসহ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে ওঠা প্রতিটি অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। এই অভিযোগে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়।
ডিবিএন/ডিআর/মাহমুদা ইয়াসমিন