ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চাঁদের দূরবর্তী দিকের নমুনা সংগ্রহ করে সফলভাবে পৃথিবীতে ফিরেছে চীনের মহাকাশযান চ্যাংই-৬। পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের ওই প্রান্তে আগে কখনও কোন যান অবতরণ করেনি। সম্পূর্ণ অজানা ছিল চাঁদের এই দূর্গম অঞ্চল। প্রায় দুই মাসের দীর্ঘ ঝুঁকিপূর্ণ অভিযান শেষে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৫ জুন) ইনার মঙ্গোলিয়া মরুভূমিতে চ্যাংই-৬ সফলভাবে অবতরণ করে। খবর-বিবিসির।
বিজ্ঞানীরা অধীর আগ্রহে চ্যাংই-৬ এর জন্য অপেক্ষা করছেন কারণ মহাকাশযানটির নিয়ে আসা নমুনাগুলো কীভাবে গ্রহ-উপগ্রহগুলো গঠিত হয়েছিল সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে। চলতি বছরের মে মাসে চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ হাইনানের ওয়ানচাং কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে চ্যাংই-৬ চন্দ্রযান উৎক্ষেপণ করা হয় ও রোববার এটি চাঁদের পৃষ্ঠে নামে।
চীনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’- এর মতে, চ্যাং’ই-৬ প্রথমবারের মতো চাঁদের দূরবর্তী দিকের নমুনা সংগ্রহ করে ৪ জুন (মঙ্গলবার) যুক্তরাজ্যের সময় মধ্যরাত সাড়ে ১২টায় পৃথিবীর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলেছেন, চাঁদের পৃষ্ঠ খনন করার জন্য একটি ড্রিল ও রোবোটিক হাত ব্যবহার করে সেখানকার শিলা এবং মাটি সংগ্রহ করতে সফল হয়েছে মহাকাশযানটি।
এই ঐতিহাসিক মিশনের কাজ শেষ করার পর একটি চীনা পতাকাও চাঁদের মাটিতে গেথে দিয়ে আসে চ্যাংই-৬। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনয়িং এক এক্স পোস্টে লিখেছেন, ‘মিশনটি সম্পন্ন হয়েছে।’ পাশাপাশি এটিকে ‘চাঁদের অনুসন্ধানের ইতিহাসে একটি অভূতপূর্ব কীর্তি!’ হিসেবেও উল্লেখ করেন চুনয়িং।
গভীর ও অন্ধকার সব খাদ দিয়ে ভরা চাঁদের এই দূরবর্তী দিক চিরকাল পৃথিবীর বিপরীত দিকে মুখ করে আছে, এ কারণে এখান থেকে যোগাযোগ ও এখানে রোবটিক অবতরণ অভিযান চালানো অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ‘সিনহুয়া নিউজ এজেন্সি’ বলেছে, চাঁদের দক্ষিণ মেরু-এইটকেন বেসিন নামের বিশাল খাদে অবতরণ করে চ্যাংই-৬। এ গর্তটি প্রায় ১৩ কিলোমিটার গভীর ও ২৫ কিলোমিটার চওড়া, যা চারশ কোটিরও বেশি বছর আগে তৈরি হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।
আজ ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১১:১৬ | রবিবার
ডিবিএন/এসই/ এমআরবি