বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন ১৭ কোটি ১৫ লাখ ৯০ হাজার। জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ ভিত্তিতে ১ জানুয়ারি প্রাক্কলিত এ জনসংখ্যা রয়েছে। এর আগের হিসাবে জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার।
রোববার (২৪ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর অডিটোরিয়ামে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। এ হিসাব অনুযায়ী, ১৭ লাখ ৬১ হাজার জনসংখ্যা বেড়েছে।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার। উপস্থিত ছিলেন, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন, পরিসংখ্যান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস-২০২৩’ শীর্ষক এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। সে অনুযায়ী, প্রাক্কলিত জনসংখ্যায় নারী আট কোটি ৭৩ লাখ ৯০ হাজার এবং পুরুষ ৮ কোটি ৪২ লাখ। ২০২৩ সালে প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল ৭২ দশমিক ৩ বছর। জনসংখ্যা স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ২০২২ সালে ১ দশমিক ৪০ শতাংশ ছিল।
প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যা এক হাজার ১৭১ জন। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুহার হাজারে ৩৩ জন। প্রতি লাখ জন্ম নেওয়া শিশুর বিপরীতে মাতৃমৃত্যুর হার ১৩৬ জন। ২০২২ সালে ১৫৩ জন ছিল। শিক্ষা, কর্মে কিংবা প্রশিক্ষণে নেই এমন তরুণের সংখ্যা হ্রাস পেয়ে ৩৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ হয়েছে। ২০২২ সালে ছিল ৪০.৬৭ শতাংশ।
স্বাভাবিক পদ্ধতিতে সন্তান প্রসবের হার ২০২২ সালের ৫৮ দশমিক ৬ শতাংশ সেই তুলনায় হ্রাস পেয়ে ২০২৩ সালে হয়েছে ৪৯ দশমিক ৩ শতাংশ এবং অস্ত্রোপচার পদ্ধতিতে প্রসবের হার ২০২২ সালের (৪১.৪%) তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালে হয়েছে ৫০ দশমিক ৭ শতাংশ। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় স্থূল মৃত্যুহার ৬ দশমিক ১ শতাংশ যা ২০২২ সালে ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ।
পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ৩৩ এবং প্রতি লাখ জীবিত জন্ম শিশুর বিপরীতে মাতৃমৃত্যুর অনুপাত ১৩৬ জন, যা ২০২২ সালে ছিল ১৫৩ জন।
মৃত্যুর শীর্ষ দশ কারণের ১ম কারণ- হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ০২ শতাংশ এবং ২য় কারণ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক ৬৪ শতাংশ।
পুরুষদের প্রথম বিবাহের গড় বয়স ২৪ দশমিক ২ বছর এবং নারীদের ১৮ দশমিক ৪ বছর। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে পল্লিতে আগমনের হার ২০ দশমিক ৪ এবং শহরে আগমনের হার ৪৩ দশমিক ৪। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অভিগমন প্রতি হাজারে ৬১ জন থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৭৮ জন। আন্তর্জাতিক আগমন/বহিরাগমন প্রতি হাজারে ২৯৭ থেকে হ্রাস পেয়ে হয়েছে ২দশমিক ৩৭ জন।
২০২৩ সালে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০২২ সালের (৬৩.৩%) তুলনায় কিছুটা হ্রাস পেয়ে ২০২৩ সালে হয়েছে ৬২.১ শতাংশ।
জন্মনিয়ন্ত্রণের অপূর্ণ চাহিদা ২০২২ সালের (১৬.৬২%) তুলনায় হ্রাস পেয়ে ২০২৩ সালে ১৫.৫৭ শতাংশ হয়েছে। খানার আকার ২০২২ সালের ন্যায় ২০২৩ সালেও অপরিবর্তিত রয়েছে যা ৪.২ জন।
তবে, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে নারী খানাপ্রধানের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালে এটি ছিল ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ, যা ২০১৩ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ।
অপরদিকে, পুরুষ খানাপ্রধান ২০২২ সালে ছিল ৮২দশমিক ৬ শতাংশ, ২০২৩-এ হার হ্রাস পেয়ে হয়েছে ৮১ দশমিক১ শতাংশ। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭ দশমিক ৫৩ শতাংশে। সাত বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী জনসংখ্যার সাক্ষরতার হার ২০২৩ সালে হয়েছে ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের ক্ষেত্রে এ হার ২০২২ সালের (৭৪.৪%) তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭৫ দশমিক ৬ শতাংশ।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম