জহির, লক্ষ্মীপুরঃ লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে নিম্নমানের কাজের অভিযোগে ৭০ লাখ টাকা ব্যায়ে রাস্তার নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে গ্রামবাসী। শনিবার (১০ এপ্রিল) উপজেলার কেরোয়া ইউপির কয়েকজন আ’লীগ নেতাসহ গ্রামের সচেতন মানুষ ক্লাব সংলগ্ন ফয়েজ উল্যা মিজি বাড়ী, নগদিব বেপারি বাড়ী ও দেওয়ান বাড়ী এলাকায় এ কাজ বন্ধ করে দেয়। এরিপোট লেখা পর্যন্ত ওই রাস্তার কাজ শনিবারও (১০ এপ্রিল) ঠিকাদার শুরু করেননি। গ্রামবাসী ক্ষুদ্ধ রয়েছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) রায়পুর সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যায়ে কেরোয়া ইউপির এক প্যাকেজে এক কিলোমিটার তিনটি রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু হয় চার মাসে আগে। কাজটি পেয়েছেন লক্ষ্মীপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিয়াজ এন্ড ব্রাদার্স। তাদের পক্ষে কাজটি তদারকি করছেন রায়পুরের সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা কৌশিক সোহেল।
কেরোয়া গ্রামের আ’লীগ নেতা শামছুল ইসলাম মাস্টার, ফারুখ রহমান ও মোঃ সেন্টু ও মোস্তফা নোমানসহ আট-নয়জন ব্যক্তি শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বলেন, এ রাস্তাগুলো দিয়ে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ প্রতিদিন রায়পুর-রামগঞ্জ ও চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৪’শ-৫’শ মানুষ চলাচল করে থাকেন। বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে গত ৬মাস ধরে বেহাল এ কাঁচা রাস্তার (ফয়েজ উল্যা মিজি বাড়ী, নগদিব বেপারি বাড়ী ও দেওয়ান বাড়ী) কাজ করার সময় নামমাত্র নিম্নমানের বালু ও ইট দিয়ে কাজ শুরু করেন।
এ সময় ঠিকাদারের মিস্ত্রি ওই কার্যসহকারীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা সে সময় ওই জায়গায় ছিলেন। তাঁরা ঠিকাদারের মিস্ত্রির কাছে এলজিইডির কার্যসহকারীর এ অসহায় অবস্থা দেখে আরও প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার সকালে (৮ এপ্রিল) ওই বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকজন আ’লীগ নেতাসহ গ্রামের লোকজন কাজ বন্ধ করে দিয়ে রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে আছে।
রায়পুরের ঠিকাদার কৌশিক সোহেলের কয়েকজন মিস্ত্রী বলেন, ‘ রাস্তার কাজ বন্ধ করার বিষটি সাথে সাথে ঠিকাদারকে জানালে তিনি আসেননি। ইট পরিমানে কম দিয়েছেন, তবে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ ঠিক নয়।’
এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী তাজল ইসলাম বলেন, ‘আমি বৃহস্পতিবার সেখানে গিয়ে জনগণকে বলেছি, যেখানে কাজ খারাপ হচ্ছে, সেগুলো ঠিক করে দেওয়া হবে (১০% জায়গায় ৪০% দিতে বলেছি)। কিন্তু তাঁরা কোনো কথাই শুনলেন না। কাজ বন্ধ করে দিলেন।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ঠিকাদার কৌশিক সোহেল বলেন, কয়েকজন গ্রামবাসী না বুঝেই ৫২ লাখ টাকা ব্যায়ে এক প্যাকেজে দুই রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে কাজ শুরু করি।
উপজেলা প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি সরজমিন রাস্তায় গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব।’