দীর্ঘ ৫০ বছরেও পাকাকরন করা হয়নি নেত্রকোণা সদর উপজেলার কাইলাটী ইউনিয়নের বিচিপাড়া-ফচিকা সড়কটি। সামান্য বৃষ্টি হলেই বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। প্রচন্ড কাঁদায় যানবাহনতো দুরের কথা হেঁটেও চলাচল করতে পারেনা এলাকায় বসবাসরত সাধারণ মানুষ। মাত্র প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশায় অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। দ্রুত পাকাকরনের দাবী তাদের।
নেত্রকোণা-মদন মেইন সড়ক থেকে সদর উপজেলার কাইলাটী ইউনিয়নের বিচিপাড়া এলাকা দিয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার একটি বাইপাস সড়ক রয়েছে। যা নেত্রকোণা-কেন্দুয়া মেইন সড়কের ফচিকা এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদর হওয়ায় এই বাইপাস সড়কটির অনেক গুরুত্ব রয়েছে। ৪টি গ্রামের মানুষসহ শহরের বিভিন্ন এলাকার জনগণ চলাচল করে এই সড়ক দিয়ে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে অটোরিক্সা, রিক্সা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যান চলাচল করে থাকে। দীর্ঘদিন পার হয়ে গেলেও মাটির এই সড়কটি পাকা হয়নি। এতে করে চরম ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ।
বিচিপাড়া গ্রামের অটোচালক কার্তিক সরকার বলেন, ‘নিজেদের বাড়িঘর থাকা স্বত্বেও লক্ষীগঞ্জ বাজারে টাকা দিয়ে অটো চার্জ দিতে হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কে অনেক বেশি কাঁদা এবং বড় বড় গর্ত থাকায় অটো বাড়িতে নিতে পারছিনা। শুধু আমি নয়, এলাকার অনেক অটোচালকদের একই অবস্থা। স্থানীয় সরকারসহ এমপি-মন্ত্রী থাকা স্বত্বেও আমাদের এই অবস্থা। আমাদের কি অপরাধ ? আমরা কি সরকারের মৌলিক অধিকার পেতে পারিনা?’
স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধা হান্নান ও সুনীল সরকার বলেন, ‘বিভিন্ন সময় এই সড়কটি পাকাকরনের জন্য অনুমোদন হয়। কিন্তু বারবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ এটি কেটে অন্য জায়গায় নিয়ে যায়। নির্বাচনের সময় আমাদের সড়ক পাকাকরনের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর তাদের চোখে দেখা যায়না। এই এলাকায় একটি প্রাইমারী স্কুল এবং দুইটি মাদ্রাসা রয়েছে। ছোট ছোট শিশুরা লেখাপড়া করতে গিয়ে অনেক সময় পা পিছলে কাঁদায় পড়ে গিয়ে বই-খাতা, কাপড়-চোপড় নষ্ট করে। সময়মত বিদ্যালয়ে যেতে পারেনা। বৃষ্টি হলে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ থাকে। যারা ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার দুরে শহর এলাকায় চাকুরি করে, তারা কোন সময়ই গ্রামের বাড়িতে আসেনা। অন্যত্র বসবাস করে অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন। কারন একটাই, সড়কের বেহাল অবস্থা। দ্রুত পাকা করনের দাবী জানাচ্ছি।’
স্থানীয় ইউপি মেম্বার এমদাদুল হক বলেন, ‘আমি বার বার উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছেনা। তিনবার এই সড়কটি সংস্কারের জন্য অনুমোদন হলে তিনবারই কেটে অন্যত্র নিয়ে যায় উর্ধতন কর্তৃপক্ষ। তারপরও বারবার তাদের অবহিত করে যাচ্ছি সড়কটি পাকাকরনের জন্য।’
সদর উপজেলার প্রকৌশলী মোঃ আল আমিন সরকার বলেন, ‘এই মুহুর্তে সড়কটি সংস্কারের কোন সুযোগ নেই। পরবর্তীতে সুযোগ থাকলে চেষ্টা করা হবে। তবে সংস্কারের জন্য অনুমোদন হয়ে গেলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় কেটে নেয়ার কোন ব্যবস্থা নেই।’
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজ বাপ্পি