মো. নাছির উদ্দিন, হোমনা কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ কুমিল্লার হোমনায় নির্বাচনী শত্রুতার জের ধরে সালাহ উদ্দিন ওরফে জহির(২৫) নামে এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে ঘনিয়ারচর – তেভাগিয়া ষ্টীল ব্রীজের পাশে যুবলীগ নেতা সালাহ উদ্দিন জহিরকে একা পেয়ে কুপিয়ে মৃত্যু হয়েছে মনে করে ফেলে যায়। পরে মারাত্মক আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়।
নিহত সালাহ উদ্দিন জহির আছাদপুর ইউনিয়নের ঘনিয়ারচর গ্রামের মো. রেনু মিয়ার ছেলে। ইউনিয়ন যুবলীগ কর্মী ও ওয়াইফাই ব্যবসায়ী।
এলাকাবাসি সূত্রে জানাযায়, গত ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে একই গ্রামের ৩ জন ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনে অংশগ্রহন করেন। মো. সিদ্দিকুর রহমান( নৌকা), জালাল উদ্দিন পাঠান (আনারস) ও মুকবল হোসেন পাঠান (ঘোড়া) প্রতীকে প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। নির্বাচনে জালাল উদ্দিন পাঠানকে ও তার ভাতিজা মুকবল হোসেন পাঠান সমর্থন দিয়ে প্রচুর অর্থ ব্যয়ে নৌকার প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমানকে পরাজিত করে। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জালাল উদ্দিন পাঠান নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর থেকে মুকবল পাঠানের ইন্ধনে এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চেষ্ঠা করে আসছে। এতে এক পক্ষ অপরের কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা মামলা করছে।
নিহত সালাহ উদ্দিন জহির পরাজিত প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমানের সমর্থক। পূর্ব শত্রুতার জেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রামকৃষ্ণ পুর থেকে বাড়ি আসার পথে তেভাগীয়া ষ্টীল ব্রীজের নিকটে তাকে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হাত ও পা কেটে ফেলে মৃত্যু হয়েছে মনে করে ফেলে রেখে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে প্রেরন করা হয়। রাতেই তার মৃত্যু হয়। ময়না তদন্ত শেষে শুক্রবার রাতে তার লাশ দাফন করা হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। থানায় এ ব্যাপারে হত্যা মামলা হয়েছে।
এদিকে নিহত সালাহ উদ্দিন জহিরের বাবা মো. রেনু মিয়া ছেলের শোকে বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন। পরিবারের দাবি নির্বাচনকে ঘিরে শত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে।
নিহতের চাচা ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মো. শহিদ মিয়া জানান, নির্বাচনী শত্রুতায় আমার ভাতিজাকে হত্যা করা হয়েছে। নির্বাচনের পর থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান জালাল পাঠান ও তার ভাতিজা মুকবল পাঠানের ইন্ধনে তাদের লোকজন প্রকাশ্য নৌকার কর্মীদের হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। সালাহ উদ্দিন জহির মারা যাওয়ার আগে, বলেগেছে ১০/১৫ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ তাকে কুপিয়েছে। এর মধ্যে ইয়াসিন, শামীম, সেলিম, বাছির সহ কয়েক জনের নাম বলতে পেরেছে।
তিনি আরো বলেন, জালাল উদ্দিন পাঠান যুবলীগ নেতা মুসলেম হত্যা মামলার আসামী ও মুকবল পাঠান একাধিক নারী পাচার মামলার আসামী। ইউপি চেয়ারম্যান মুঠো ফোন রিসিভ না করায় ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে মুকবল হোসেন পাঠান জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তবে এর সাথে যারা জড়িত তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করেছেন তিনি।